লকডাউন ঘোষণা হতেই মদের দোকানে লম্বা লাইন

Spread the love

রাজ্যে উর্ধমুখী করোনা সংক্রমণ। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রবিবার থেকে আগামী ১৫ দিন রাজ্যে কার্যত লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। সংক্রমণ এড়াতে বন্ধ থাকছে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস। বন্ধ থাকবে বাস, অটো, মেট্রো। বাজার খোলা থাকবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা থেকে শহরতলিতে, লম্বা লাইন দেখা গেল মদের দোকানে। শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা তো দূর অস্ত, কার্যত মদের দোকানের সামনে গায়ে গা লাগিয়ে হুড়োহুড়ি করতে দেখা গেল কয়েকজনকে। কেউ জানালেন, রাতে একটু না খেলে ঘুম আসে না। কোনও মহিলা ব্যাগভর্তি মদ নিয়ে যাওয়ার সময় জানালেন স্বামীর জন্য কিনেছেন।

শনিবার বিকেল। কসবায় মদের দোকানে বিস্তর লাইন। সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। এক ক্রেতাকে জিজ্ঞেস করতেই স্বীকারোক্তির সুরে বললেন, “রাতে একটু না খেলে ঘুম হয় না।” সেখানেই দেখা গেল একজন মহিলা ব্যাগে গুনে গুনে ১১টি দেশি মদের বোতল ঢোকালেন। জানালেন, স্বামীর জন্য মদ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

শুধু কসবা নয়, কলকাতার ধর্মতলা থেকে সল্ট লেক সিটি সেন্টার ওয়ান, আলিপুর বর্ধমান রোড থেকে মমিনপুর মোড় সর্বত্রই মদের দোকানের রেল গাড়ির মতো সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে জনতা। অপেক্ষা মদের জন্য। বেশিরভাগ জায়গাতেই করোনা বিধি ভেঙেই চলছে মদ কেনার ধুম। ঠাকুরপুকুর শিলপাড়ার মদের দোকানে আবার এমনই বিশৃঙ্খলা ছড়াল যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে হল পুলিশকে। তাতে অবশ্য কোনও বিকারও নেই। কে বলবে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ২০ হাজার ছাড়িয়েছে নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। মারা গিয়েছেন ১৩৬ জন।

কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে মুর্শিদাবাদ জেলায় জেলায় লকডাউনের আগের দিন বিকেলে একই ছবি। মদের দোকানে অপেক্ষমান মানুষ, তাদের কারও মুখে রয়েছে মাস্ক, কেউ আবার সেটাও মুখে লাগানোর সময় পাননি। থলে নিয়ে সোজা ছুটে এসেছেন মদের দোকানে। সুরাপ্রেমীদের এই ছবি সব জায়গাতেই এক।

মদের দোকানের এই ভিড় দেখে কেউ মনেই করতে পারবে না বাংলায় করোনা কতটা ভয়াল ভাবে থাবা বসিয়েছে। হাসপাতালে বেডের অভাব। অক্সিজেন মিলছে না। কিন্তু মদ কেনার লাইন দেখে মনে হচ্ছে, ওষুধ নয় মানুষের সুরা চাই। এই দৃশ্য দেখে বোঝা যাচ্ছে যে, ১৫ দিন নেশার জিনিস না পাওয়ার ভয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিতেও তাঁরা প্রস্তুত। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ, নারী রয়েছেন এই মদ কেনার লাইনে। সব মিলিয়ে মনে হতে পারে মানুষের কাছে ভাত-রুটির চাইতে এখন মদের চাহিদাই বেশি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*