করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে ব্যর্থ মোদী সরকার এমন অভিযোগ আগেই ছিল। এ বার টিকা আকালের অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদীকে তোপ দেগে গোটা দিল্লি জুড়ে ছেয়ে গেল পোস্টার। মোদীবিরোধী পোস্টারের ছড়িয়ে পড়ার খবর পেয়েই অতিতৎপর হয়ে ওঠে দিল্লি পুলিশ। শনিবার রাতে কমপক্ষে ২৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন অটোওয়ালা, তেমনই রয়েছে ১৯ বছরের স্কুলছুট পড়ুয়া।
সূত্রের খবর, রাজধানীর একাধিক জায়গায় মোদীর উদ্দেশে পোস্টার-ব্যানার লাগানো হয়েছে। সেই পোস্টারে হিন্দিতে লেখা রয়েছে, ”মোদীজি, আপনি বাচ্চাদের ভ্যাকসিন কেন বিদেশে পাঠালেন?” কে বা কারা এর পিছনে, তা জানা না গেলেও দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্বাঞ্চলীয়, পূর্ব, মধ্য এবং উত্তর-পূর্ব—রাজধানীর ৪টি পুলিশ ডিভিশনেই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ ধরনের বহু পোস্টার-ব্যানার পড়েছে।
পূর্ব দিল্লির বাসিন্দা বছর চব্বিশের এক যুবক রাহুল ত্যাগীকে মোদীবিরোধী ব্য়ানার লাগানোর জন্য গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত ওই যুবক জানিয়েছে স্থানীয় আম আদমি পার্টির কাউন্সিলর তাকে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ১১টি ব্যানার লাগাতে বলেছিল, বদলে ৬০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। যদিও আপের স্থানীয় নেতা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রাজধানীজুড়ে যেখানে যেখানে এমন পোস্টার দেওয়া হয়েছে, সেই সমস্ত পোস্টার সরিয়ে দেয় দিল্লি পুলিশ। সেই সঙ্গে ডিফেসমেন্ট অব পাবলিক পপার্টি অ্যাক্ট-সহ একাধিক ধারায় ১৩টিরও বেশি এফআইআর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংগঠিত ভাবেই এই পোস্টার লাগানোর কাজ করা হয়েছে বলে পুলিশ আধিকারিকদের একাংশের অনুমান।
প্রসঙ্গত, কোভিড মোকাবিলাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্র। ল্যানসেটের মতো নামী গবেষণা পত্রিকার সম্পাদকীয়তেও কোভিড মোকাবিলায় সমালোচনা করা হয়েছে মোদী সরকারের। এছাড়া বিরোধী দলগুলির নির্ঘোষ রয়েছেই। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি-র এককালের শরিক শিবসেনা থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের মতো ব্যক্তিত্বও। বিরোধীদের অভিযোগ, ধীরগতিতে টিকা কেনা ও টিকা জোগান নিয়ে রাজ্যগুলির কাঁধে দায় ঠেলে দিতে ব্যস্ত কেন্দ্র। অথচ, কোভিড মোকাবিলা করতে কেন্দ্র সরকারকে বিরোধীরা মিলে একজোটে একাধিক পত্রাঘাত করেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। এমনকী কোভিড চিকিৎসার সরঞ্জাম করমুক্ত করার আর্জি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে রাহুল গান্ধী। তারপরেও হুঁশ ফেরেনি কেন্দ্রীয় সরকারের এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।
Be the first to comment