নারদ মামলায় সাত সকালে পরপর গ্রেফতারি। ফিরহাদ হাকিমকে তাঁর চেতলার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। অন্যদিকে এ দিন নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের নারদ-কাণ্ডে চূড়ান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। আর এই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ হিসেবেই বর্ণনা করছে তৃণমূল।
এ দিন এই ঘটনার পর তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এখনও চলছে। মানুষ বিচার করে রায় দিয়েছে। কিন্তু, নির্বাচনের পরেও বিপুল পরাজয় মানতে না পেরে ওরা এই কাজ করছে।’ এই ঘটনায় সরাসরি বিজেপি দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি।
অন্যদিকে সৌগত রায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘মোদী শাহের নির্দেশেই এই গ্রেফতারি।’ তাঁর দাবি, সিবিআই কী বলছে তাতে কিছু যায় আসে না। সিবিআই তো বিজেপির তোতা। তিনি বলেন, ‘ওদের গ্রেফতার করলে আদালতে মোকাবিলা হবে।’
তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘এই গ্রেফতারি আসলে অবৈধ।’ তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালের এই অনুমোদন অবৈধ। রাজ্যপালের কোনও এ ভাবে অনুমোদন দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই। গ্রেফতারি অসাংবিধানিক।’ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল বিজেপির হয়ে কাজ করছে।’ পুলিশকে না জানিয়ে কী ভাবে সিবিআই গেল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘মুকুল রায়কে কেন গ্রেফতার করা হল না’। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে, কল্যান বলেন, ‘রাজ্যপাল রক্তের পিছনে দৌড়চ্ছে। রাজ্যপাল একটা দৈত্য, রক্তখেকো বাঘ।’
উল্লেখ্য, গ্রেফতার হওয়া চার নেতার মধ্যে ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রী। দু’জনেই সদ্য শপথ নিয়েছেন। পাশাপাশি ফিরহাদ হাকিম কলকাতার পুর প্রশাসকও। এছাড়া মদন মিত্র তৃণমূলের বিধায়ক। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় এই মুহূর্তে তৃণমূলের সদস্য নন। দল বদলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তবে নারদ কাণ্ডের স্টিং অপারেশন যখন হয়েছিল তখন চারজনই তৃণমূলের মন্ত্রী ছিলেন। ক্যামেরায় যে ছবি ধরা পড়েছিল তাতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে। উল্লেখ্য সেই তালিকায় ছিল সৌগত রায়ের নামও। এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। পরে এদের মধ্যে অনেককেই সিবিআই দফতরে ডাকা হয়েছে। মদন মিত্র জেলও খেটেছেন এই মামলায়।
Be the first to comment