নারদ কেলেঙ্কারি মামলায় দুই মন্ত্রী-সহ চারজনের গ্রেফতারি ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড কলকাতায়। নিজাম প্যালেসে CBI দফতরের সামনে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো টুইটারে হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইটারে রাজ্যপাল লিখেছেন,’এই নৈরাজ্যের পরিণতি কী হতে পারে, আশা করি আপনারা সেটা বুঝতে পারছেন।
উল্লেখ্য, নারদ মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। গ্রেফতারির প্রতিবাদে নিজাম প্যালেসে অবস্থানে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনায় যেভাবে তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন, তা নিয়ে রাজ্যপালের এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ। টুইট বার্তায় তাহলে কীসের ইঙ্গিত দিলেন রাজ্যপাল? তাহলে কি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে? এমন চর্চাই তুঙ্গে রাজ্য রাজনীতিতে।
টুইটারে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘রাজ্যে নৈরাজ্য চলছে। পুলিশ-প্রশাসন নীরব। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হচ্ছে। হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে পরিস্থিতি। আইনশৃঙ্খলা বজা. রাখতে পদক্ষেপ করতে হবে। সরকারকে সাংবিধানিক নিয়মকানুন মেনে চলার কথা বলছি। টিভিতে দেখছি, CBI অফিস লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া হচ্ছে। আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ, দেখে করুণা হচ্ছে।’
এদিকে, নারদ কেলেঙ্কারি মামলায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও এক বিধায়ককে গ্রেফতারের ঘটনায় CBI আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে চিঠি দিল তৃণমূলের মহিলা কংগ্রেস। ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি অনৈতিক বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস। পাশাপাশি এই ঘটনার নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রয়েছেন অভিযোগ করেছে জোড়াফুল শিবির।
চিঠিতে শাসকদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমাদের বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন। বিধানসভা নির্বাচনে জিততে ব্যর্থ হওয়ায় আমাদের নেতাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এসব করছেন। রাজ্যপালকে নির্দেশ দিচ্ছেন।’
পাশাপাশি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। চিঠিতে শাসক শিবির উল্লেখ করেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে কাজ করছেন রাজ্যপাল। কাউকে গ্রেফতারের জন্য CBI-কে কীভাবে নির্দেশ দিতে পারেন রাজ্যপাল, এ প্রশ্নও তুলেছে তারা। এ নিয়ে রাজ্যপালের কোনও সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। পাশাপাশি মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হল না সে নিয়েও সুর চড়িয়েছে শাসক শিবির।
Be the first to comment