“আমার ইনসুলিন চলে হাই ডোজে। আমার সুগার মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে যে মন্তব্য তিনি করেছেন, আমি আশা করব যে যাঁদের পক্ষ থেকে বলছেন তাঁরাই লজ্জা পাবেন। এই ব্যক্তি মহিলাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। তৃণমূলকে ডিফেন্ড করছেন। কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলা হয়নি। আইনিভাবে সব ব্যবস্থা হোক সেটাই চেয়েছিলাম। চিকিৎসার ব্যাপারেও সেটাই চেয়েছিলাম।…আমি বন্ড দিয়েও বাড়ি ফিরতে চাই।” শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালের বারান্দা থেকে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ‘মনের কথা’ জানালেন নারদা মামলায় গৃহবন্দি হওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে নাম না করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকে নিশানা করলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করা হচ্ছে।
শোভনের অভিযোগ, তাঁকে অন্যায় ভাবে ডিসচার্জ করছে না এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রথমে কুণাল ঘোষকে নিশানা করে তিনি জানান, ‘উনি জেলে থাকার সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেছিলেন।’ এর পর শোভন জানান, তাঁর আর শারীরিক অসুবিধা নেই। এমনকি তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠিয়ে দেওয়ারও আবেদন জানান তিনি। অভিযোগ করেন, তাঁকে জোর আটকে রাখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এদিনই তাঁর বিশেষ কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না এসএসকেএম হাসপাতালে বলে অভিযোগ করেছিলেন শোভন। তাই ব্যক্তিগত ‘রিস্ক বন্ড’ দিয়ে তাঁকে বাড়ি ফেরানোর আবেদন করেছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। নিজের আইনজীবীর মারফত একইদিনে হাসপাতাল এবং জেল কর্তৃপক্ষের কাছে মোট পাঁচটি চিঠি পাঠিয়েছেন শোভন। বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শোভনের ঠিকঠাক চিকিৎসা করাবেন তিনি। এর অব্যবহিত পরেই উডবার্নের বারান্দা থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন ‘গৃহবন্দি’ শোভন চট্টোপাধ্যায়।
উডবার্নের দোতলার বারান্দা থেকে ঝুঁকে শোভন বলেন, ‘আমার আইনি বিষয় দেখবেন বৈশাখী।’ তাঁর ডিভোর্স মামলা নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায় শোভনকে। রত্না চট্টোপাধ্য়ায়ের নাম না করে তিনি বলেন, বেহালার বাড়িতে তিন বছর ধরে উনি আছেন। গত তিন বছর আমার বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা চলছে। সেই মামলা শেষ হলে বেহালার বাসস্থান সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব।
প্রসঙ্গত, এসএসকেএম সুপারকে এর আগে আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি দিয়ে শোভন জানিয়েছিলেন, হাসপাতালে তাঁর ঘরে রত্না দেবীকে যেন না ঢুকতে দেওয়া হয়। শোভন জানান, তিনি এসএসকেএমে না খেয়ে রয়েছেন। এখানে যদি না বলা কথা থেকে যায়… তাই সাংবাদিকদের কাছে তাঁর আসা। প্রশ্ন তোলেন, কেন নারদ মামলায় মাত্র চারজনকে আটক করে রাখা হয়েছে?
এদিকে শোভনের এই সাংবাদিক বৈঠক প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘গ্লাকসো বেবি অভিযোগ করছেন জানালা দিয়ে। এটা হোটেল না হাসপাতাল?’ তিনি আরও যোগ করেন, হাসপাতাল যদি ছেড়ে দেয় তাহলে জেলেই ফেরত যেতে হবে শোভনবাবুকে। তাঁর টিপ্পনী, “উনি জেলে থাকলে অসুস্থ হন আর হাউস অ্যারেস্ট হলেই সুস্থ হয়ে যান। এই দু’জন (শোভন-বৈশাখী) -এর জন্য পরিবেশ লঘু হচ্ছে।”
Be the first to comment