দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন অরিজিৎ সিংয়ের মা। সোশ্যাল মিডিয়ায় গায়কের মায়ের জন্য সবাইকে রক্তদানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন সৃজিত-স্বস্তিকারা। অনুরোধে সাড়াও মিলেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরে ব্রেন স্ট্রোক, ভেন্টিলেশন, একমো সাপোর্ট সব করেও পারেননি মাকে বাঁচাতে। গত বুধবার রাত এগারোটা নাগাদ শহরের হাসপাতালে মাত্র ৫২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অরিজিতের মা অদিতি সিং।
মা-কে হারানোরশোক এখনও কাটেনি। কিন্তু কঠিন সময়ে মাতৃহারা ছেলে মানুষের পাশে দাঁড়াল। দাঁড়াল তাঁর নিজের শহর মুর্শিদাবাদের মানুষের পাশে। করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশ জেরবার। হাসপাতালে বেড নেই। রক্তের অভাব। অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। চারিদিকে হাহাকার শুরু হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের কথা মাথায় রেখে অরিজিৎ নিলেন এক উদ্যোগ। মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে পাঁচ-পাঁচটিটি হাই ফ্লো নেজাল অক্সিজেন থেরাপি মেশিন দিয়ে সাহাযয় করলেন অরিজিৎ। ‘ধৃতী ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে মুর্শিদাবাদ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক প্রশান্ত বিশ্বাস এর হাতে মেশিনগুলো তুলে দেন গায়ক। অরিজিতকে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক । মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সরকারি হাসপাতালে করোনা মোকাবিলায় ব্যবহৃত হবে এই মেশিন।
এটি প্রথমবার নয়। অরিজিৎ আগেও বহুভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। তবে গোটাটাই করেছেন প্রচারের আড়ালে থেকে। শুধু সাহায্যের হাতই বাড়াননি সময়ে-সময়ে, করোনা বিধিনিষেধ মেনে চলার আবেদনও জানিয়েছেন মানুষদের। অরিজিতের শেষ সোশ্যাল পোস্টেও মিলেছে তাঁর প্রমাণ।
তিনি লেখেন, ‘আমি আবার বলছি। দয়া করে নিজেরা লক ডাউন করুন। বাইরে বেরোবেন না। আমি জানি আমরা এমন একটি দেশ যেখানে একদিন কাজ না করলে মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবে। তাই দয়া করে ডাবল মাস্ক পড়ুন। পারলে ফেস-শিল্ড পড়ুন। চোখ মুখ নাক কান এবং মুখ স্পর্শ করবেন না। যদি করেন তবে আগে হাত স্যানিটাইজ করুন। প্রতি আধ ঘন্টায় সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। আপনি যদি পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করছেন তাহলে আগে স্যানিটাইজ করুন কিংবা সাবান জল দিয়ে ধুয়ে নিন। খালি পেট থাকবেন না। সর্বদা সতর্ক থাকুন। আপনাকে যদি বাইরে যেতেই হয় তাহলে মন শক্ত করে পরিবার এর থেকে দূরে থাকুন। আপনার লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হন।
Be the first to comment