নারদ মামলায় চার নেতা-মন্ত্রীর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হাইকোর্টের

Spread the love

নারদ মামলায় নাটকীয় মোড়। চার অভিযুক্তের শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চের। ২ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বণ্ডে জামিন পেলেন ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, নারদ মামলা সহ পুরনো কোনও মামলা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না এই চার অভিযুক্ত। কোনও তথ্য প্রমাণও বিকৃত করা যাবে না বলে সতর্ক করেছে আদালত।

শুক্রবার সকালে বেলা ১১টায় পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী প্রথমেই চার অভিযুক্তের জামিনের মামলার শুনানি শুরু হয় বৃহত্তর বেঞ্চে। শুরুতেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন,’শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া যায় কিনা সেই নিয়ে ভাবনা চলছে। অভিযুক্তদের অন্তর্বতী জামিন দিয়ে বাকি মামলার শুনানি চলতে পারে। কারণ, এই মামলা অনেকদিন চলবে। ততদিন তারা অন্তর্বর্তী জামিনে থাকবেন। মামলায় চলতে চলতে প্রয়োজন হলে জামিন খারিজ করা যেতে পারে।’

এরপরই সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতার মতামত জানতে চায় আদালত। স্বভাবতই এর বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতের সামনে ফের প্রভাবশালী যুক্তি দিতে চান। যা শুনে পাল্টা বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় তুষার মেহেতাকে প্রশ্ন করেন, ‘২০১৭ সাল থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এতদিন যখন গ্রেফতার করা হয়নি। আমরা সবাই লক ডাউনের মধ্যে আছি। অভিযুক্তরা মামলা হওয়ার পর পরই গ্রেফতার হননি। তখনও তারা প্রভাবশালী ছিলেন। এখন গ্রেফতারির প্রয়োজনীয়তা কেন? বিপর্যয়ের সময় মানুষের জন্য তাঁদের কাজ করা দরকার।’

তাতেও সিবিআই আইনজীবী মামলা ঠাণ্ডাঘরে চলে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করলে, তুষার মেহতাকে আশ্বস্ত করে বিচারপতি রাজেশ বিন্দল জানান, ‘মামলা ঠান্ডাঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে না’। এরপরই জামিন নিয়ে একাধিক শর্ত আরোপ করার আর্জি জানিয়েছিলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। অভিযুক্তদের মিডিয়া থেকে দূরে রাখার আর্জিতে সম্মতি দিয়ে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ নারদে অভিযুক্ত ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অন্তবর্তী জামিনের সঙ্গে সঙ্গে একাধিক শর্ত আরোপ করে। এর ফলে জামিনে মুক্তি পেলেন চার নেতা-মন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, এতদিন গৃহবন্দি ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, শোভন চক্রবর্তী ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এসএসকেএম-এর উডবার্নে আছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। প্রসঙ্গত, ১৭ তারিখ সকালে রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ তিন নেতাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে CBI। এরপর নিম্ন আদালতে মামলা উঠলে চার অভিযুক্ত জামিন দেওয়া হলেও ওইদিন রাতেই হাইকোর্টে সিবিআইয়ের পাল্টা মামলায় জামিনে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।

এরপরই জামিনের পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। পরে শুনানি চলাকালীন জেল হেফাজতের রায়কে পরিবর্তন করে গৃহবন্দি করে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। এদিন হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে মঞ্জুর চার হেভিওয়েটের শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*