রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কী তবে নিজের গড়েই কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন? পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় এখন একই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে চারিদিক থেকে বেঁধে ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই নানা কমিটি, সমিতি থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁর ঘনিষ্ঠ লোকজন ধরা পড়ছেন নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। সেচ–ত্রিপল–সমবায় ব্যাঙ্কের নানা দুর্নীতি নিয়ে তদন্তে নেমেছে নবান্ন। এবার তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কো–অপারেটিভ ব্যাঙ্ক থেকে তাঁর ডান–হাত গোপাল মাইতিকে সরানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির কথায়, ‘১৪ জন ডিরেক্টরের মধ্যে পাঁচজনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আর তিনজনের সমর্থন পেলেই আমরা চেয়ারম্যানকে সরাতে পারব।’ বরাবরই এই জেলার সমবায় রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের প্রভাব রয়েছে। প্রায় তিন দশক ধরে সমবায় রাজনীতিতে প্রভাব দেখিয়েছে তারা। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়া এবং একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। শুভেন্দু–ঘনিষ্ঠ এবং অনুগামীদের বিভিন্ন সমবায় ব্যাঙ্কের পদ থেকে ছাঁটাই পর্ব শুরু হয়। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে খোদ শুভেন্দুকেও সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবার কোপ পড়তে চলেছে তাঁর ঘনিষ্ঠদের উপর।
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ, নিজে তমলুক ঘাটাল কো–অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে না থাকলেও গোপালকে ঢাল করে প্রভাব বিস্তার করতেন শুভেন্দু। তাই তাঁর প্রভাব থেকে এই সমবায় ব্যাঙ্ককে মুক্ত করতে উদ্যোগী ভূমিকা নেওয়া হয়েছে। মেদিনীপুর জেলার তিনটি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন শুভেন্দু। কাঁথি ছাড়াও বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক এবং কাঁথি কার্ড সমবায় ব্যাঙ্কেরও চেয়ারম্যান তিনি।
এই সব সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে যাতে তাঁকে দ্রুত সরানো যায় তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর। এমনকী শুভেন্দুর অনুগামীদের যাতে বিভিন্ন লাভজনক পদ থেকে সরানো যায় তার চেষ্টাও করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্টের সম্পাদকের পদ থেকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু–অনুগামী শ্রীধর মিশ্রকে। তারপরই তমলুকের তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকে হুটআউট করে দেওয়া হয় বিরোধী দলনেতাকে। আবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর সমবায় ব্যাঙ্ক থেকেও যাতে শুভেন্দুকে সরানো যায় সেই উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
Be the first to comment