বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করার প্রতিবাদে অন্যান্য সব কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন বিজেপি বিধায়করা। এই সিদ্ধান্তের নেতৃত্ব দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এমনকী এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে গিয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন। সেখানে নালিশ ঠুকেছেন তাঁরা। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আখেরে বিজেপি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সুবিধা করে দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কী সুবিধা হলো? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপির রাজ্য নেতা ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হল না। বরং তৃণমূল কংগ্রেসের চালে আমরা পরাস্ত হলাম। বাকি কমিটিগুলি থেকে সরে দাঁড়ানোয় ওদের সুবিধা হয়ে গেল। একেবারেই নিজস্ব কায়দায় সবকিছু করবে। কেউ দেখার থাকল না। বলার থাকল না। ফলে বিরোধিতা হবে কি করে! এমনকী মুকুল রায়ের রাস্তাও পরিষ্কার হযে গেল। তাঁকে আর কোনও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হবে না।’ এই বিষয়টি বিরোধী দলনেতা হয়ে বুঝতে পারেননি শুভেন্দু অধিকারী বলে মনে করা হচ্ছে।
বিরোধীতা করার জন্য বিরোধীতা করতে গিয়ে নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারল তাঁরা বলে মনে করছেন অনেকে। এই বিষয়ে কয়েকদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘এলওপি অর্থাৎ লিমিটলেস অপর্চুনিস্ট। নিজে পদে থেকে অন্যদের সরিয়ে রাখতে চেয়েছেন। হিম্মত থাকলে নিজের পদ থেকে অপসারণ করে দেখাক।’ অর্থাৎ বিজেপি বিধায়কদের শুভেন্দু অধিকারী নিষ্ক্রিয় করে রাখলেন বলে বোঝাতে চেয়েছেন নাম না করে। এটা যে দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকা পালন করা হলো না তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আজ রাজভবনের বাইরে শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিধানসভার পিএসি চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনীতিকরণ করেছে। ৩০২ ধারা লঙ্ঘন করে মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়েছে।’ এখন তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় স্তরে লড়াই করার দিকে এগোচ্ছে। সেখানে এই ভাবমূর্তি তুলে ধরা গেলে বিপাকে পড়বে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিজেপির বিধায়ককেই তো পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়েছে। তাহলে অসুবিধা কোথায়? লাভ–ক্ষতির অঙ্কে এখন জোর চর্চা বিধানসভার অন্দরে।
Be the first to comment