বাংলায় এসে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করে গিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদল। ইতিমধ্যেই সেই তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করেছে কমিশন। আর এই রিপোর্ট ঘিরেই তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে কারণ, রিপোর্টে রাজ্যের একাধিক তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ উল্লেখ করেছে কমিশন।
এছাড়াও কমিশনের পেশ করা রিপোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই তদন্ত ছাড়াও একগুচ্ছ সুপারিশ করা হয়েছে। যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তৃণমূল শিবিরে। কমিশনের এই রিপোর্ট নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কমিশনের এই কুখ্যাত তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। রিপোর্টে রয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ, বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা, জীবন সাহা, খোকন দাস ও নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের নাম।
এই রিপোর্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শরণাপন্ন হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। রিপোর্ট শুরু করার আগে কবিগুরুর নাম উদ্ধৃত করে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘কবিগুরুর মাটিতে হিংসা অনভিপ্রেত। তাই এই হিংসা অবিলম্বে বন্ধ হোক।’
এছাড়াও কমিশনের পেশ করা রিপোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই তদন্ত ছাড়াও একগুচ্ছ সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে এই গোটা মামলার বিচারপর্ব রাজ্যের বাইরে কোনও আদালতে করারও আবেদন জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় আদালতের পর্যবেক্ষণে সিট গঠন করে তদন্ত করারও আবেদন জানানো হয়েছে।
এছাড়াও বিচারপ্রক্রিয়া যাতে কোনওভাবেই বিলম্বিত না হয়, সেজন্য বিচারপ্রক্রিয়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে শেষ করার সুপারিশও করা হয়েছে। এই মামলা চালানোর জন্য সরকারি আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করেছে কমিশন। একইসঙ্গে সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান, কমিশনের পেশ করা রিপোর্টে সেই আবেদনও করা হয়েছে।
Be the first to comment