মমতা বন্দ্যোপাধায়ের সরকারকে হুঁশিয়ারি দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি নির্ভরতা শোনা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। এখন ঘরে–বাইরে প্রবল চাপের মুখে রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। নানারকম তদন্ত শুরু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিজেপির অন্দরে অনেকে শুভেন্দুকে মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই আজ বিধানসভায় কোনও কমিটিতে নেই বিজেপি বিধায়করা। আর এই চাপের পরিস্থিতিতে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘দেশে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী আছেন। ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরকে সোজা করে দিয়েছেন’ অর্থাৎ এই রাজ্যকেও সোজা করে দেবেন প্রধানমন্ত্রীই বলে বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।
আবার মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকার হুঁশিয়ারি দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে তো আমরা আবেদন করে আনিনি। আদালত পাঠিয়েছে। রিপোর্টটা দেখলেন তো।’ সম্প্রতি নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা ঠেকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
এমনকী, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীদের নাম–সহ কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের তালিকা জমা পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। যদিও এই রিপোর্ট সাজানো বলে অভিযোগ করেছে শাসকদল। আবার এই কমিশনের দলে থাকা আতিফ রশিদকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ তিনি আগে বিজেপি করতেন। এরপরও শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘অনেক গুন্ডা। দলদাস পুলিসের নাম বাদ চলে গিয়েছে। সব আমরা আগামীদিনে বলব। ভেবেছিলেন যা খুশি করব! দেশে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী আছেন। আপনারা একটা প্রদেশে আছেন। ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরকে সোজা করে দিয়েছেন। ডাললেকের ধারে এখন তেরঙ্গা পতাকাগুলি ঝুলে, সবুজ পতাকা দেখা যায় না। আমাদের সংবিধান আইনের শাসনের উপর দাঁড়িয়ে আছে। আর রিপোর্টে এক নম্বর লাইনে লেখা আছে, পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন।’
বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্য থেকে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় সরকার নির্ভরতা দেখা যাচ্ছে। সুতরাং রাজ্যের দায়িত্বে থেকে সেখানে কিছু করতে না পেরে এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে দিয়ে রাজ্য সরকারকে টাইট দিতে চাইছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। এখন বিজেপির রাজ্য সবাপতি দিলীপ ঘোষ ছুটি কাটাতে গিয়েছেন। আর রাজ্যে তিনি বারবার রাজ্যপালের কাছে নালিশ ঠুকছেন। এবার সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারকে দিয়ে বাংলার সরকারকে সোজা করে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন।
Be the first to comment