ইতিমধ্যে ১৩ বছর অতিক্রম করেছে সিঙ্গুর আন্দোলন। তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সরকারই বাংলায় স্বাগত জানাল টাটাদের। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের পর টাটাদের ছোটো গাড়ি প্রকল্প এ রাজ্য ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিল ভিনরাজ্যে। এত বছর পর শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এ রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য টাটাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’
পার্থবাবু বলেন, ‘ আমরা শিল্প স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের প্রক্রিয়া সহজ করব।’ তিনি এও উল্লেখ করেন যে, জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। জমি নীতিতে কোনও পরিবর্তন হবে না। তিনি বলেন, ‘শিল্প সংস্থাগুলিকে নিজস্ব বা সরকারের নির্দিষ্ট ল্যান্ড ব্যাঙ্ক ও শিল্প পার্কের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ রাজ্যে শিল্পের জন্য সংযোগ, পরিকাঠামো ও আইন-শৃঙ্খলার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া দক্ষ ও সাশ্রয়ী শ্রমও উপলব্ধ রয়েছে।’ সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তৃণমূলকে শিল্পবিরোধী তকমা দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন পার্থ। তিনি বলেন, ‘যদি এমনটা ঘটে থাকে তাহলে, দল টানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পারত না।’
পাশাপাশি রাজ্যের ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে পার্থ আরও বলেন যে, ‘সংস্থাগুলোকে উৎসাহ দেওয়াটা কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষমতার উপর নির্ভর করবে।’ এদিন তিনি আরও বলেন যে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন কোনও বড় শিল্পগোষ্ঠী এরাজ্যে প্রাথমিক ভাবে দু’টি বড় উৎপাদন কারখানা তৈরি করুক।
এছাড়াও টাটাদের উদ্দেশে পার্থ বলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমাদের কোনও দিনই শত্রুতা ছিল না। আমরা টাটাদের বিরুদ্ধে লড়াই করিনি। তাঁরা এই দেশে ও বিদেশের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তবে আপনি সিঙ্গুর আন্দোলনের জন্য তাদেরকে দোষ দিতে পারবেন না।’ তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘মূল সমস্যা ছিল বামফ্রন্ট সরকার ও তাদের বলপূর্বক জমি অধিগ্রহণ নীতিকে নিয়ে। সেক্ষেত্রে টাটা গ্রুপ বাংলা এসে বিনিয়োগ করতে চাইলে তাঁদের সর্বদাই স্বাগত।’
পার্থবাবু আরও জানান, ‘লবণ ও স্টিলের ব্যবসায় টাটাগোষ্ঠী কলকাতার অফিস তৈরি করার জন্য আরও একটি দফতর তৈরি করার আগ্রহ দেখিয়েছে। আমাদের এখানে ইতিমধ্যেই টিসিএস ছাড়াও টাটা মেটালিকস রয়েছে। তবে তারা যদি উৎপাদন বা অন্যান্য খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়, তাহলে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। আমাদের তথ্যসচিব সম্প্রতি আমাকে বলেছেন যে, তাঁরা নিজেরাই এখানে টাটা কেন্দ্র স্থাপন করার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে আমাদের আধিকারিকরা যোগাযোগ রাখছেন।’
Be the first to comment