তৃণমূলের পাখির চোখ ত্রিপুরা। ঢেলে সাজছে সংগঠন। ভোটে লড়াইয়ের আগে সে রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে আঞ্চলিক দলের জোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেই জল্পনা আরও উসকে গেল বৃহস্পতিবার। এদিন ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মনের সঙ্গে বৈঠক করলেন কুণাল ঘোষ। তবে প্রদ্যোৎ শুধুমাত্র মহারাজা নন, জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় অন্যতম প্রধান মুখও বটে। ফলে এই সাক্ষাৎ ঘিরে বেড়েছে জল্পনা।
প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের পরপরই বুধবার আগরতলা যান বাংলায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সেখানে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করছেন তিনি। পাশাপাশি, সিপিএম-কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে দেখাও করছেন তিনি। এদিন যেমন ত্রিপুরার রাজ পরিবারের ১৮৬তম বংশধর প্রদ্যোতের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। যদিও কুণালের দাবি, “সৌজন্য সাক্ষাৎ। সাংবাদিকতাও করেছেন উনি। মোহনবাগান এবং ফুটবল পছন্দ করেন। সাংবাদিকতা ও খেলাধুলো নিয়ে গল্প হয়েছে।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের পর নতুনভাবে উজ্জীবিত রাজ্যের তৃণমূল কর্মীরা। জোট রাজনীতির চর্চা শুরু হয়েছে আগরতলায়। উত্তর পূর্বের এ রাজ্যের ৬০ আসনের মধ্যে ২০টি উপজাতি প্রভাবিত। তাই উপজাতি দলগুলোর নেতারা তৃণমূলের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
ইতিমধ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে মুখ খুলেছেন ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সদস্য। প্রদ্যোৎ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি হলেও এখন জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় অন্যতম প্রধান মুখ। ত্রিপুরা ইন্ডিজেনিয়াস প্রগ্রেসিভ রিজিওনাল অ্যালায়েন্স বা টিপ্রা র প্রধান। তিপ্রা মথা বা টিপরা ঐক্য নামেও ডাকা হচ্ছে। এই দল গঠন করে এরিয়া ডেভলপমেন্ট কাউন্সিল বা এডিসি-র ভোটে সিংহভাগ আসন জেতেন। সেই তিনি অভিষেককে ত্রিপুরায় স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “তৃণমূল উপজাতি মানুষদের স্বার্থরক্ষায় সহমত হলে জোট হতেই পারে।”
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার কংগ্রেসকে বাংলার মতোই সিপিএমের-বি টিম মনে করা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধাশীল, রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে। আগামী ভোটে তিনিও অবশ্যই ফ্যাক্টর হতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রদ্যোতের সঙ্গে কুণালের সাক্ষাৎ ঘিরে ত্রিপুরায় নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের জল্পনা দানা বাঁধল।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, ত্রিপার সঙ্গে জোট করে জনজাতির ভোট নিজের ঝুলিতে টানতে চাইবে তৃণমূল। পাশাপাশি, বাঙালি আবেগকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির ভোটব্যাংকে থাবার পরিকল্পনা করছে ঘাসফুল শিবির। আর এই দুই অংক মিলে গেলেই ত্রিপুরায় বাজিমাত করতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
Be the first to comment