তিনি নয়া কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। বুধবার তিনি বীরভূমে এসেছিলেন। আর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়েই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়েই। আর তা দাঁড়িয়ে শুনলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী থেকে আরও অনেকে। হ্যাঁ, তিনি বাংলা থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার। বুধবার সেন্ট্রাল হলে তিনি দাবি করেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালো ছিলেন। তাই ছোটবেলায় কেউ কোলে নিত না। ব্যস, বিতর্ক শুরু। আগে বিজেপির অন্যান্য নেতারা বলেছিলেন, বিদ্যাসাগরের রচিত সহজপাঠ। রবীন্দ্রনাথের জন্ম বীরভূমে। এবার তাতে নয়া সংযোজন করলেন বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার।
ঠিক কী বলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী? বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, ‘তাঁর বাড়ির চেহারাগুলি যদি দেখা যায়, সকলের গায়ের রং ধবধবে ফর্সা ছিল। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও গায়ের রং সত্যিকারের ফর্সা ছিল। ফর্সা সাধারণত দুই প্রকারের হয়। একজন দেখবেন একদম টকটকে হলুদ। আর একজন লোক হচ্ছে ফর্সার মধ্যে একটু লাল ভাব থাকে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গায়ের রং দ্বিতীয় ধরনের। তাই তাঁর মা এবং বাড়ির অনেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কালো বলে তাঁকে কোলে নিতেন না। সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষের হয়ে বিশ্ববিজয় করেছেন।’ এই তথ্য তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন তাঁর ব্যাখ্যা দেননি তিনি। বরং তাঁর মন্তব্য, ঠাকুরবাড়িতে বর্ণ–বৈষম্য নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিজেপি নেতাদের বিশ্বভারতীতে উপস্থিতি নিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘বিশ্বভারতীর উপাচার্য একটি পাগল মানুষ। বাড়িতে তাঁকে ইনজেকশন দিতে হয়। এই পাগল উপাচার্য বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি নষ্ট করে দিচ্ছে। বিশ্বভারতীর রাজনীতিকরণ আগে দেখিনি। এবার বিশ্বভারতীর মধ্যে আমিও অনুষ্ঠান করব।’
সুভাষ সরকারের মন্তব্যে যখন রাজ্য–রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে তখন বিষয়টি নিয়ে মতপ্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। তাঁর কথায়, ‘দিদি বলেছেন রবি আমাদের কালো ছেলে। কিন্তু তাঁর বাড়িতে সবাই ফর্সা ছিলেন, উনি একটু কম ফর্সা ছিলেন। কালো মানে কি আফ্রিকানদের মতো কালো? পরিপ্রেক্ষিত না বুঝে একটা কথা বলে দিলেন। ঠাকুরবাড়িতে কাউকে কোলে নেওয়া হত না। ওভাবে কোলে করে আদর করার প্রথা ছিল না। দাসদাসীদের কাছে থাকতেন, মা একটু আদর করতেন। শিক্ষামন্ত্রীর মুখে এই কথাগুলি শুনে ভয়ঙ্কর হাসি পাচ্ছে। কাদের হাতে আমরা ক্ষমতা অর্পণ করে বসে আছি!’
Be the first to comment