পুলিশের অতি সক্রিয়তার তদন্ত দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষের স্ত্রী তানিয়া ঘোষ। তানিয়ার বক্তব্য, পুলিশ সেদিন অতি সক্রিয় হয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে তাঁর স্বামী সজল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল ৷ পুলিশের এই অতি সক্রিয়তার একটা নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি ৷
সোমবার মামলার বিষয়ে সজল ঘোষের আইনজীবী তরুণ জ্যোতি তেওয়ারি বলেন, “সেদিন যেভাবে সজল ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার থেকে প্রমাণিত রাজ্যে শাসকের আইন চলছে আইনের শাসন নেই। যে সমস্ত পুলিশ অফিসার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছি আমরা ।
পাশাপাশি সেদিন বেশ কিছুটা সময় থানায় ছিলেন সজল ঘোষ ৷ তখন কেন পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি? বিনা নোটিশে এইভাবে গ্রেফতার করা যায় না ৷ এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা। এই সমস্ত কিছুর নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছি আমরা।’’
প্রসঙ্গত, মুচিপাড়া থানা এলাকায় একটি ক্লাব ভাঙচুরের ঘটনায় গত ১২ আগস্ট সন্ধ্যেবেলা বিজেপি নেতা সজল ঘোষের বাড়ির দরজা ভেঙে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে ৷ পুলিশের বক্তব্য ছিল, বিজেপি নেতাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা সত্বেও তিনি আত্মসমর্পণ না করায়, পুলিশ বাধ্য হয়েছিল এভাবে গ্রেফতার করতে। সজল ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৩, ৪২৭, ১৪৭-১৪৮, ১৪৯ ধারায় ভাঙচুর চালানো, অস্ত্র আইনের মামলা দায়ের হয়েছিল।
গত ১৪ আগস্ট তাঁকে নগর দায়রা আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী জানায়, সজল ঘোষের কাছে যে অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে, তা উদ্ধারের জন্য ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের প্রয়োজন। অন্যদিকে সজল ঘোষের আইনজীবী জানায়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সজল ঘোষের নামে। তিনি বিজেপি পার্টির সদস্য বলেই তাঁর বিরুদ্ধে শাসকদল অভিযোগ সাজিয়েছে। এর পর নগদ দায়রা আদালত দু’দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছিল।
এর পর গত ১৬ আগস্ট নগর দায়রা আদালতে সজল ঘোষের তরফে জানানো হয়, তাঁর বিরুদ্ধে টাকা লুটের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি সম্পন্ন ঘরের ছেলে। একজন সক্রিয় সমাজকর্মী। অস্ত্র রাখার অভিযোগও মিথ্যা। অন্যদিকে রাজ্যের তরফে বলা হয়, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্লাব থেকে লুট করে সজল ঘোষ নিজের ঘরে রেখেছেন। অস্ত্রশস্ত্রও রয়েছে তাঁর ঘরে। অতএব, ২৫ আগস্ট পর্যন্ত সজল ঘোষকে পুলিশ হেফাজত দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারক সঙ্গীতা চট্টোপাধ্যায় সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শোনার পর কুড়ি হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে বিজেপি নেতার জামিন মঞ্জুর করেন।
Be the first to comment