এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষকদের জন্য একাধিক সুযোগ-সুবিধা চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। তারপরও ‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’ এমনই মন্তব্য করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
‘অন্যায়ভাবে’ বদলির অভিযোগে মঙ্গলবার বিকাশ ভবনের সামনে ‘বিষ’ পান করেন পাঁচজন এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষিকা। তাঁরা দাবি করেন, শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে একাধিক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। নবান্নের সামনে গিয়েছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছিলেন। আন্দোলনের ‘শাস্তি’ হিসেবে তাঁদের ‘হোম ডিস্ট্রিক্ট’ থেকে বহু দূরে বদলি করা হয়েছে। ‘বিষ’ পানের জেরে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। আপাতত তিনজন আরজি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং দু’জন নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনজনকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে।
তারইমধ্যে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী মুখ খোলেন। বাম সরকারকে তোপ দাগেন। ব্রাত্য বলেন, ‘বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীনে এসএসকে এবং এমএসকের সহায়ক/সহায়িকা, সাম্প্রসারক/সম্প্রসারিকারা নামমাত্র সাম্মানিকের বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযোগসুবিধা বলে কিছু ছিল না।’ সেইসঙ্গে তৃণমূল সরকারের আমলে এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষকদের জন্য কী কী সুবিধা প্রদান করা হয়েছে, তা তুলে ধরেন ব্রাত্য।
তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গত বছর ১ ডিসেম্বর থেকে তৃণমূল সরকার এসএসকে এবং এমএসকে পদগুলিকে বিদ্যালয়শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনে একটি সুসংবদ্ধ রূপ দিয়েছে। সহায়ক/সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০,৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক/সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩,৩৯০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও বাৎসরিক তিন শতাংশ ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে। প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে। যাঁরা ৬০ বছরে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, অবসরের সময়ে তাঁদের প্রত্যেকের জন্য তিন লাখ টাকার এককালীন অবসর-ভাতা চালু করা হয়েছে।
বাকিদের জন্যও এই সুবিধা দানের বিষয়ে অর্থ দফতরের সঙ্গে ফাইলের (আদান-প্রদান) চলছে। ৬০ বছরে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের জন্য চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়েছে। মহিলাদের জন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেককের জন্য চিকিৎসা-সংক্রান্ত সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ বা ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে।’
ব্রাত্যের বক্তব্য, সেই সুযোগ-সুবিধা চালুর পরও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা মোটেও প্রকৃত শিক্ষক নন। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘তারপরেও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, বিজেপি ক্যাডার।’
Be the first to comment