দুয়ারে রেশন প্রকল্পের শুরুতেই ধাক্কা ৷ এমনিতেই রেশন ডিলাররা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল ৷ মঙ্গলবার প্রকল্প উদ্বোধনের মঞ্চে রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশন এবং শেয়ার প্রাইস শপ অনার্স ফেডারেশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সরব হলেন ৷ আর তাতেই রীতিমতো বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ অনুষ্ঠান থামিয়ে দুই সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করলেন তিনি ৷
শুধু তাই নয়, উভয় পক্ষকে খুশি করতে বেশ কিছু ঘোষণাও করলেন তিনি ৷ তবে, এর পরেও নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে উপস্থিত রেশন ডিলার থেকে শুরু করে শপ ওনার্সরা খুশি হলেন এমন কথা বলা যাবে না ৷ বরং অনুষ্ঠান শেষে সরকারি বন্দোবস্ত নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁরা ৷ বোঝাই যাচ্ছে সরকারি চাপের কারণে এই মুহূর্তে সরকারের কথা মেনে নিলেও আদতে খুশি হননি রেশন ডিলাররা ৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন ঘোষণা করতে পারেন এই আশায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ভরিয়ে ছিলেন বহু রেশন ডিলার থেকে শুরু করে ডিস্ট্রিবিউটার এবং ওনার্সরা ৷ তাদের ক্ষোভ ও দাবি-দাওয়ার কথা বুঝে এদিন বেশ কিছু ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এবার থেকে নতুন ডিলারশিপ নিতে গেলে আর দিতে হবে না এক লক্ষ টাকা ৷ মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েই ডিলারশিপ নেওয়া যাবে ৷
শুধু তাই নয়, এ দিন মমতা ঘোষণা করেন প্রকল্পের নাম দুয়ারে রেশন হলেও মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দিয়ে আসতে হবে না ডিলার ও দোকানের মালিকদের ৷ এক্ষেত্রে ৫০০ মিটার পর্যন্ত একদিনে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করলেই হবে ৷ ওই নির্দিষ্ট এলাকায় মানুষ সেখান থেকে রেশন নিয়ে যাবে অর্থাৎ, নাম দুয়ারে রেশন হলেও, রেশন দেওয়া হবে পাড়া বা মহল্লায় ৷ এটাই রেশন ডিলারদের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল ৷
এছাড়াও, বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছে দিতে প্রয়োজন হবে ২১ হাজার গাড়ি ৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিলাররা যদি নিজেদের গাড়িতে রেশন পৌঁছে দেন তবে তাঁদের ১ লাখ টাকা করে ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার ৷ রেশন পৌঁছে দিতে নতুন গাড়ি কিনলেও একই টাকা ভর্তুকি দেওয়া হবে ডিলারদের ৷ পাশাপাশি, কুইন্টাল প্রতি কমিশনও বাড়ানো হয়েছে রেশন ডিলারদের ৷ একসঙ্গে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এতদিন রেশন ডিলাররা কোনও কর্মী নিয়োগ করতে পারতেন না ৷ এখন থেকে দু’জন করে কর্মী নিয়োগ করতে পারবেন তাঁরা ৷ আর এদের বেতন হবে ১০ হাজার টাকা ৷ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই কর্মীদের অর্ধেক বেতন অর্থাৎ, ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে ৷
এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুয়ারে রেশন প্রকল্পে শুধু মানুষের বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে গেল তাই নয় ৷ নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হল ৷ নতুন গাড়িও বিক্রি হবে প্রচুর ৷ সবমিলিয়ে রাজ্যের অর্থনীতি মজবুত হবে ৷” এদিন মুখ্যমন্ত্রী একথা ঘোষণা করলেও অনুষ্ঠান ফেরত রেশন ডিলাররা বলছেন, এতে তাঁদের কোন সুবিধাই হল না ৷ কারণ এতদিন যাদের ৫ হাজার টাকায় বা ছয় হাজার টাকায় নিয়োগ করতেন ৷ তাদেরই এখন ১০ হাজার টাকা দিতে হবে ৷ ড্রাইভার নিয়োগের পর আরও বাড়তি একজনের দায়িত্ব নেওয়ায় চাপ বাড়ল রেশন ডিলারদের উপর ৷
Be the first to comment