কাশফুল-কেও শিল্পের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, প্রচুর টাকায় বিক্রি হতে পারে কাশফুলের বালিশ ও বালাপোশ। বৃহস্পতিবার হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্য়মন্ত্রী। সেখানে নরমে-গরমে কাজের খতিয়ান চান তিনি। হাওড়া ভূমি দফতরের কাজে গাফিলতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দৃশ্যতই রেগে যেতে দেখা যায় তাঁকে।
মমতাকে বলতে শোনা যায়, কারা এত বড় বড় নেতা দেখি একটু। মমতা বলেন ল্যান্ড ডিপার্টমেন্টের অনেকে ইচ্ছে করে ডিলে করিয়ে দিচ্ছে। আগে আমরা একটা সিস্টেম করেছিলাম। সেটা বন্ধ হয়েছে কেন? কার নির্দেশে হয়েছে? কারা এত বড় বড় নেতা দেখি। এরপর কাজের খতিয়ান শুনে মমতা জিজ্ঞেস করেন কেন দীর্ঘদিন ধরে না হওয়া কাজ পড়ে রয়েছে।
এর পর শিল্পোদ্যোগের কথায় আসেন মমতা। বলেন, আমরা বাংলা ডেয়ারি করছি। উল্লেখ্য, গত আগস্টেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের দুগ্ধশিল্পকে চাঙ্গা করতে মাদার ডেয়ারি, মেট্রো ডেয়ারির পর সম্পূর্ণরূপে রাজ্য সরকারি উদ্যোগে দুগ্ধজাত পণ্যের নতুন সংস্থা চালু হবে। যার নাম হবে ‘বাংলার ডেয়ারি’। সদ্য উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীই ‘বাংলার ডেয়ারি’র রূপরেখা জানিয়েছিলেন মমতা। এদিনও এ নিয়ে বিস্তারিত জানান তিনি।
এর পর কাশফুলকে কোনও শিল্পের কাজে লাগানো যায় কিনা এ নিয়ে ভাবতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, কেমিক্যাল দিয়ে রিসার্চের ব্যাপার আছে কিনা জানি না। তবে কাজে লাগতে পারে। এগুলো সময়ে হয়, সময়ে ঝরে যায়। কিন্তু বালাপোশ, বালিশ হতে পারে এগুলো দিয়ে। যাঁদের সামর্থ্য আছে প্রচুর টাকা দিয়ে কিনবেন।
বৈঠকে উপস্থিত একজন জানান, উলুবেড়িয়া একাধিক ক্লাস্টার আছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ শাটল কক ক্লাস্টার। তিনি জানান, ভারতে আর কোথাও ক্লাস্টারে তৈরি হয় না শাটল কক। হয় চিন থেকে আসে নাহলে কোনও ফ্যাক্টরিতে তৈরি হয়। এর জন্য দরকার হাঁসের পালক।
এটা শুনেই লুফে নেওয়ার ভঙ্গিতে মমতা বলেন, “ইট’স আ গুড আইডিয়া। হাঁসের পালক। তোমরা তো এখন হাঁসের পোল্ট্রি করছ। এখন তো গ্রামে গঞ্জে হাঁস আছে। সেল্ফ হেল্প গ্রুপকে হাঁসের পালকটা সংগ্রহ করতে বলো”।
তার পর মমতা জানান, ‘কাশফুল কিন্তু কাজে লাগতে পারে’। হাঁসের পালক দিয়ে একটি শিল্পোদ্যোগের কথা বলায় এমনই জানান মুখ্য়মন্ত্রী। বলেন, ‘এটা নিয়েও দেখা যেতে পারে’। তার পর আমলার উদ্দেশে হেসে বলেন, ‘এবার দুয়ারে হাঁসের পালক!’
মমতার কথায়, “এই কাশফুল তার পর উড়ে চলে যায়। কোনও কাজে লাগে না। এটাকে যদি কেমিক্যালি, টেকনিক্যালি কীসব দিতে হবে…আমি জানি না। তবে এই কাশফুল দিয়ে কিন্তু বালিশ, বালাপোশ হতে পারে। ওই বালিশ মনে হয় প্রচুর টাকা দিয়ে কিনবে যাদের ক্ষমতা আছে। সুতরাং ওই কাশফুলটাকে তোমরা কেমন ইউজ করতে পারো দ্যাখো তো।
প্রসঙ্গত, কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। বাংলার নদীর ধার, শুকনো রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনও উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় দেখা যায়। নদীর তীরেই সচারচর বেশি জন্মাতে দেখা যায় এদের। শরৎ ঋতুতে সাদা ধবধবে কাশফুল ফোটে। আবার শীতের সময় এগুলো ঝরে যায়। সেই কাশফুলকেই কাজে লাগাতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়া এদিন একাধিক কাজের খতিয়ান জানার পর সেগুলো তাঁকে দেখানোর কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘স্যাটাস্যাট করে দেব।’
Be the first to comment