সব কিছুই ঠিক ছিল। প্রশাসনিক বৈঠকে মোটামুটি খোশ মেজাজেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। হাওড়ার নতুন বিধায়কদের খোঁজ-খবর করছিলেন। কিন্তু থমকালেন হাওড়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে। তীব্র ভর্ৎসনা করলেন তাঁকে। নেত্রী তাঁকে বোঝালেন তৃণমূলের কালচার সম্পর্কে। কিন্তু হঠাৎ কী হল?
প্রায় তিন মাস ধরে এলাকায় জমে রয়েছে জল। পুরসভার প্রশাসকদের বলেও কাজ হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা নিত্যদিন নাজেহাল হচ্ছেন। এই অভিযোগ তুলে এবার নিজের বিধানসভা এলাকাতেই গত অক্টোবর মাসে চেয়ার নিয়ে ধর্নায় বসে পড়েন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক। কালো নোংরা জলে বসে নবান্ন থেকে তৈরি করা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর বিরুদ্ধেই তাঁর প্রতিবাদ জানান। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কোপে পড়লেন তিনি।
প্রশাসনিক বৈঠকে মমতার প্রশ্ন, “তুমি গৌতম চৌধুরী? তুমি রাস্তায় বসে ছিলে কেন একদিন?” গৌতমকে কাঁচুমাচু হয়ে বলতে শোনা যায়, “দিদি ওই জায়গাটা জল জমে গিয়েছিল।” তৎক্ষণাৎ মমতা বলে ওঠেন, “তাতে কী হয়েছে, জল জমে গিয়েছিল… প্রকৃতি কি আমাদের হাতে? তুমি জানো যে, ৮০ বছরে এত বৃষ্টি হয়নি?
মমতা আরও যোগ করেন, “তুমি কাজ করবে, কো-অপারেশন করবে, আস্তে আস্তে…” এর পর বিরক্ত ভঙ্গিতে হাত তুলে মমতা বলেন, “তা নয়, তুমি রাস্তায় বসে গেছো খালি গায়ে, এ আবার কী! তৃণমূল কংগ্রেসের একটা কালচার আছে। খবরদার এটা কোর না।”
গৌতমকে মমতা বলে দেন, “টিভিতে একদিন দেখাবে। কিন্তু মানুষ মনে রাখবে ৩৬৫ দিন। আমি বাধ্য হয়েছি এটা তোমাকে বলতে যে করবে না। কেন করবে? দরকার হলে জলটা সরানোর চেষ্টা করবে। তিনি আরও যোগ করেন, তোমাদের এখানে, হাওড়ায় জল জমা একটা প্রবলেম। পুরনো ড্রেনেজ। তার জন্য তিনটে ফেজের টাকা দিয়ে করা হচ্ছে। কাজ হয়েওছেও শর্ট টাইমে”। মমতা দাবি করেন, গত ৭০ বছরে এত কাজ কেউ করেনি।
এদিন নতুন বিধায়কদের ধারনা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে জনগণের ভাণ্ডার ঠিক মতো চলছে তো? সবাইকে সহযোগিতা করে করবে। জানান, অনেক নতুন স্কিম চলছে। আর নতুন কিছু যেন বিধায়করা না চান। উলুবেড়িয়া স্টেডিয়ামের নামকরণ কী হবে এটা নিয়ে ভাবতে বসেন মমতা। বিডিও, আইসি-দের স্কুলে স্কুলে যেতে বলেন মমতা। জানান, ‘এটা সোশ্যাল ওয়ার্ক’।
Be the first to comment