বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার জন্য সংসদে বিল পেশ করতেই হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এমনটাই বলছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও আইনজ্ঞরা ৷ শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, নয়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে ৷ সাংবিধানিক নিয়ম মেনেই এই কাজ করা হবে ৷ চলতি মাসেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে ৷ এই অধিবেশনেই গোটা প্রক্রিয়া সেরে ফেলবে সরকার ৷
কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনসচিব পি কে মালহোত্রার মন্তব্য, সংবিধান অনুসারে নতুন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংসদের যতটা ভূমিকা থাকে, কোনও আইন প্রত্যাহার বা বাতিল করতে হলেও সংসদকে সেই ভূমিকা পালন করতে হয় ৷’’ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইনসচিব জানান, নিয়ম মাফিক কৃষি আইন বাতিল করতে হলে সরকারকে তা বিল আকারে সংসদে পেশ করতে হবে ৷ তিনি বলেন, ‘‘আইন বাতিল করতে হলে পাল্টা রিপিল বিল সংসদে পেশ করতে হয় ৷ সেটাই নিয়ম ৷ যখনই এই রিপিল বিল পাস হয়ে যাবে, তখন সেটিও আইন হিসাবেই গণ্য করা হবে ৷
একই নিয়মের কথা জানিয়েছেন লোকসভার প্রাক্তন মহাসচিব পি ডি টি আচার্য ৷ তিনি বলেন, এছাড়া দ্বিতীয় আর কোনও উপায় নেই ৷ তবে তিনটি আইন প্রত্যাহার করার জন্য আলাদা আলাদা তিনটি বিল আনার প্রয়োজন নেই ৷ একটি ‘রিপিল বিল’-এর মাধ্যেমেই সংশ্লিষ্ট তিনটি আইন বাতিল করা যেতে পারে ৷ একইসঙ্গে, সরকার কেন এই তিনটি আইন প্রত্যাহার করতে চাইছে, তার উদ্দেশ্য এবং কারণ কী, বিবৃতি প্রকাশ করে সরকার পক্ষ তা সকলকে জানাতে পারে ৷
প্রসঙ্গত, যে তিন কৃষি আইন নিয়ে এত হইচই, এখনও পর্যন্ত সরকার তা কার্যকর করে উঠতে পারেনি ৷ তবে সংসদ যে বিল পাস করে সেগুলি আইনে পরিণত করেছে, সেকথা সত্যি ৷ রাষ্ট্রপতি তাতে স্বাক্ষরও করে দিয়েছেন ৷ তাই একমাত্র সংসদ ছাড়া আর কারও পক্ষেই এই আইন বাতিল করা সম্ভব নয় ৷
এদিন মোদী তাঁর ভাষণে বলেন, কৃষকদের স্বার্থেই এই তিনটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল ৷ একইসঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, সরকার কৃষকদের একাংশকে নয়া আইনের প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে পারেনি ৷ এর জন্য প্রধানমন্ত্রী এদিন ক্ষমাও চেয়ে নেন ৷ তিনি বলেন, আমি আপনাদের জানাতে চাই আমরা নয়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ চলতি মাসেই সংসদের পরবর্তী অধিবেশন শুরু হবে ৷ সেই অধিবেশনেই সাংবিধানিক নিয়ম মেনে কৃষি আইন প্রত্য়াহারের প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে ৷
Be the first to comment