আদৌ কি বিধায়ক পদে থাকতে পারবেন মুকুল রায়? এবার এই নিয়ে রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তাঁর বিধায়ক পদের বৈধতা নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী ২২ জানুয়ারি এই নিয়ে শুনানির রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে।
উল্লেখ্য, মুকুল রায় তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। বিজেপির টিকিটে তিনি কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন। এরপরই গঙ্গি দিয়ে অনেকদূর গড়িয়ে যায় জল। নির্বাচনে বিজেপি ধরাশায়ী হতেই মুকুলের ঘরওয়াপসি হয়। তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। ফল ঘোষণার পর কিছুদিনের মধ্যে তৃণমূল ভবনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল। এরপরই মুকুলকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল।
বিজেপি বিধায়ক হিসেবে তৃণমূলের সমর্থমে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে বসায় আপত্তি তোলে বিরোধী শিবির। মুকুলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরের দাবি নিয়ে আদালতে যায় বিজেপি। PAC-এর চেয়ারম্যান পদে মুকুলের নিয়োগ ‘অবৈধ’ দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থও হন শুভেন্দু অধিকারী। মামলাটি করেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে মুকুলের দলত্যাগের বিষয়ে স্পিকারকে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছিল হাইকোর্ট। কিন্তু, বিধানসভা সংক্রান্ত বিষয়ে স্পিকারের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করা যায় না বলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুকুলের সদস্যপদ খারিজ প্রসঙ্গে এর আগে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেনন, ‘আমাদের কাছে সমস্ত তথ্য প্রমাণ রয়েছে। সমস্ত অডিয়ো এবং ভিডিয়ো ক্লিপ রয়েছে। টুইটারের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ড হ্যান্ডেল, মুকুল রায়ের পিএসি চেয়ারম্যানের মনোনয়নের জন্য তৃণমূল বিধায়কের সমর্থন, সমস্তটাই তুলে ধরব আমরা। পরিষদীয় দলের তরফে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে গোটা বিষয়টিতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দীপালি বিশ্বাসের সময়ও দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকরে জন্য বাম পরিষদীয় দলের তরফে দাবি উঠেছিল। ২৩টি শুনানির পরও তা কর্যকর হয়নি। পরে নতুন করে নির্বাচন চলে আসে। কিন্তু, এবারে অবিলম্বে শুনানি শেষ করে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি দাবিতেই আইনের দ্বারস্থ হব আমরা।
মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর বার বার সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বাংলায় দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়নি বাংলা। পদ্ধতি জানি, আমি বিরোধী দলনেতা হিসেবে বলছি, দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করে দেখাব’।
Be the first to comment