মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসে অনশন প্রত্যাহার করলেন শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা বিষয়ের আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার ওয়েটিং লিস্টের সবার নিয়োগের দাবি নিয়ে সল্টলেকে স্কুলশিক্ষা দপ্তরে যাচ্ছেন তাঁরা। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। চাকরি প্রার্থীদের দাবি-দাওয়া বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন তিনি। তার একটু পরেই স্কুলশিক্ষা দপ্তরের দুই অফিসারকে অনশন মঞ্চে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে শহিদ মিনার চত্বরে মাতঙ্গিনী হাজারার মূর্তির নিচে অনশন মঞ্চে যান দুই শিক্ষা দপ্তরের কর্তা। বৃহস্পতিবার চাকরিপ্রার্থীদের বিকাশ ভবনে যাওয়ার অনুরোধ করে ফিরে যান তাঁরা। সেইমত আন্দোলনের ২০তম দিনে অনশন ভাঙেন আন্দোলনকারীরা। তবে ধরনা চলছে।
বুধবার আন্দোলনকারীদের তরফে মাহফাজুর রহমান বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থাশীল। সরকারি কর্তারা কি কারণে ডেকেছেন তা জানতে যাব। ওয়েটিং লিস্টে থাকা সবার চাকরির দাবি জানাব।” চারজনের একটি দল বিকাশ ভবনে যাবে। অন্যদিকে, এদিনই ২০১৪ সালের টেট দুর্নীতির অভিযোগে, সিবিআই এবং ইডির যৌথ তদন্তের আরজি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন করে মামলা হলেও এদিন শিক্ষক পদে নিয়োগের দাবিতে ধরনায় বসা তিনটি অবস্থান মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থার কথা শোনা গিয়েছে। শারীরশিক্ষা-কর্মশিক্ষা ও নবম থেকে দ্বাদশের মেরিট লিস্ট ধরে দ্রুত নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছেন পরীক্ষার্থীরা। বুধবার পুলিশকর্তার মাধ্যমে দুই মঞ্চের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজে বিষয়টি দেখছেন জানিয়ে আস্থা রাখার কথা বলেন। এদিন শহিদ মিনার চত্বরের অবস্থানকারী শিবানি কুইটি জানিয়েছেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থা রেখে অনশন প্রত্যাহার করেছি। তবে অবস্থান চলবে। দ্রুত সবার নিয়োগ না শুরু হলে ফের অনশন আন্দোলন শুরু হবে।” ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির নিচে অবস্থান চলছে দু’শো দিনের কাছাকাছি। দু’টি আলাদা মঞ্চে ভাগ হয়ে দিনভর ধরনায় বসে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। শারীরশিক্ষা প্রার্থীদের বিকাশ ভবনে ডাকা হলেও তাঁদের না ডাকায় কিছুটা হতাশ তাঁরা। তবে পলাশ মণ্ডল নামে এক চাকরিপ্রার্থী জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে ফোনে জানিয়েছেন তিনি বিষয়টি দেখবেন। তাঁর প্রতি আমাদের আস্থা আছে। দাবি না মিটলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) ২০১৬ সালের নবম-দ্বাদশ শ্রেণির সহকারী শিক্ষক নিয়োগ, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এদিনের মামলাকারী তাপস ঘোষের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারি দাবি করেন, ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে যে নিয়োগ হয়েছে তা দুর্নীতিপূর্ণ। মামলাকারী তাঁর আবেদনে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। মামলাকারীর আরও দাবি, সম্প্রতি দমদমের এক তৃণমূল নেতার প্রকাশ্য সভায় করা দাবি ও শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে।
Be the first to comment