দু’দিনের জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ মেদিনীপুরে পৌঁছান তিনি। এরপরই শহীদ প্রদ্যোত স্মৃতি ভবনে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মমতা। বৈঠক শুরু হওয়ার আগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ৬৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং ১২৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। আর বৈঠক শুরু হওয়ার পরই কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেন তিনি। ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নেন মমতা। তিনি বলেন,”৪ মাস ধরে ১০০ দিনের কাজের লোকেরা টাকা পায়নি। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের টাকা দেয়নি। তার জেরে গরীব মানুষরা সমস্যায় পড়েছেন। এর জন্য আমি একটি চিঠি লিখেছি।
এছাড়া আমি মুখ্য সচিবকে বলব তার নেতৃত্বে একটা কমিটি তৈরি করা হোক। ফলে কেন্দ্র টাকা না দিলেও যাতে ১০০ দিনের কাজের জন্য টাকা দিতে সমস্যা না হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে। একটা ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট ফার্ম তৈরি করে কাজ করতে হবে। কারণ কাজ করার পর কাউকে টাকা দেওয়া হবে না সেটা একেবারেই ঠিক নয়। যখন কেন্দ্র দেবে তখন দেখা যাবে। এটা নিয়ে মুখ্য সচিবকে পরিকল্পনা করতে হবে।” এরপরই PWD-র সমালোচনা শোনা যায় মমতার গলায়। এনিয়ে তিনি বলেন, “প্রকল্প করতে বেশি টাকা চায় PWD। তাদের দিয়ে সব কাজ করার দরকার নেই। ওরা কেন এত বেশি টাকা চায়?”
প্রশাসনিক বৈঠক শুরুর পর থেকে একাধিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নেন মমতা। বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি ফের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়রকে ‘লাটসাহেব’ বলে কটাক্ষ করেন। বলেন, “মেদিনীপুর কলেজের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইউনিটারি স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই কলেকজে সেই স্ট্যাটাস দেওয়া হবে।” এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “বিধানসভায় বিল পাশের পর তা আবার লাটসাহেবের কাছে পাঠাতে হবে। তিনি সই করলে তারপরে হবে।”
এদিকে বন্যার সময় প্রতিবছরই প্লাবিত হয়ে যায় ঘাটাল। এমনকী, সেই জল নামার জন্য অনেকটা সময় লেগে যায়। ফলে রাজ্যে বর্ষা প্রবেশ করার আগে ঘাটালের জন্য কী কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তাও প্রশাসনিক সভায় জানতে চান মমতা। এছাড়া জেলায় গাছ কাটা প্রসঙ্গে পুলিশ ও বন দফতরকে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন তিনি। বলেন, “যেখানেই হোক না কেন গাছ কাটা চলবে না। প্রাকৃতিক সম্পদকে কোনওভাবেই ধ্বংস করা যাবে না। কোথাও গাছ কাটা হলেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, বুধবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে বুথস্তরীয় কর্মিসভায় যোগ দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে সার্কিট হাউস থেকে কলেজ মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন তিনি। এরপর বেলা ১২ টায় কলেজ মাঠে কর্মিসভায় যোগ দেওয়ার কথা তাঁর। কর্মিসভা শেষে মেদিনীপুর কলেজ মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড থেকে কপ্টারের ঝাড়গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
Be the first to comment