কোনও মতেই বাংলা ভাগ হবে না। আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে এক সভায় মঙ্গলবার ফের একথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমাকে ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। সব বন্দুক ভোঁতা করে দেব। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, উত্তরবঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে বিজেপি। দলের নেতা, বিধায়ক সাংসদরা উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি জানিয়ে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছি, রক্ত দেব। তবু কিছুতেই বাংলা ভাগ হতে দেব না।
তিন দিনের সফরে সোমবার বিকেলে উত্তরবঙ্গে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারে তিনি একটি কর্মী সভায় ভাষণ দেন। বুধবার কালচিনির চা বাগানে আদিবাসীদের এক গণবিবাহ সভায় উপস্থিত থাকার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সেখান থেকে হেলকপ্টারে বাগডোগরা বুধবারই বিকেলের বিমানে তিনি কলকাতায় ফিরবেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মুখেই একটি ছমিনিটের ভিডিয়ো বার্তা কেএলও প্রধান জীবন সিং মমতাকে হুঁশিয়ারি দেন। জীবনের বক্তব্য ছিল, মুখ্যমন্ত্রী যেন কোচ-কামতাপুরে পা না রাখেন। কোচ-কামতাপুরের উপরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনও সাংবিধানিক অধিকার থাকতে পারে না। কোচবিহারের মানুষ পৃথক বৃহত্তর কামতাপুর রাজ্য গঠন করবেনই। তাই তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, আপনি কোচ-কামতাপুরে পা দেবেন না। রাজ্য সরকার যদি কামতাপুরের উপর অধিকার চাপিয়ে দেয়, তবে তার পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর। ওই ভিডিয়ো বার্তায় কেএলও প্রধান আরও বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা এবং বিধায়ক জয়ন্ত রায়ের কাছে পৃথক কোচ-কামতাপুর রাজ্য গঠনের দাবি করেছি।
মঙ্গলবার নাম না করে কেএলও প্রধানকেই পালটা হুঁশিয়ারি দেন। জীবন সিং বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের নাম উল্লেখ করায় মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের শাসকদলকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন। এর আগে একাধিকবার জন বার্লা এবং জয়ন্ত রায় কখনও পৃথক উত্তরবঙ্গ, আবার কখনও পৃথক কোচ-কামতাপুর রাজ্য গঠনের দাবি জানিয়েছেন প্রকাশ্যেই। তাঁদের বক্তব্য, বহু বছর ধরে উত্তরবঙ্গ নানা দিক থেকে বঞ্চিত। সেই বঞ্চনার কারণেই পৃথক রাজ্যের দাবি উঠছে।
আলিপুরদুয়ারের সভায় এদিন মমতার দাবি, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। বামফ্রন্ট সরকার উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুই করেনি। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে একাধিক পর্ষদ গঠন করেছে উত্তরবঙ্গের একাধিক জনজাতির উন্নয়নের জন্য। অনেক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গের জন্য। তিনি উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ মানতে নারাজ।
Be the first to comment