পয়গম্বর বিতর্কের আঁচে উত্তপ্ত হাওড়া। বিভিন্ন রাস্তায় চলছে অবরোধ। বিক্ষোভকারীরা হাওড়া-খড়গপুর শাখায় রেল অবরোধও করে। আর তার জেরেই ঘটল বিপত্তি। অবরোধের জেরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেনে আটকে থেকেই মৃত্যু হল এক যাত্রীর।
জানা গিয়েছে, হায়দরাবাদে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন ওই রেলযাত্রী। শুক্রবার হায়দরাবাদ-হাওড়া ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেসে চড়ে ফিরছিলেন তিনি। এস ২ কোচে ছিলেন। ট্রেন খড়গপুরে ঢোকার পর থেকেই অসুস্থ বোধ করেন তিনি। দেউলটি স্টেশনে অবরোধের জেরে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যায় ওই ট্রেনটি। সেই সময় অসুস্থতা আরও বাড়ে তাঁর। কার্যত অচেতন হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। ট্রেনে থাকা চিকিৎসকরা তাঁকে দেখেন।
চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যু হয়েছে রেলযাত্রীর। দক্ষিণ পূর্ব রেলের সিপিআরও কে এস আনন্দ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, “ওই ব্যক্তি চিকিৎসা করে হায়দরাবাদ থেকে ফিরছিলেন। পথেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। দেউলটি স্টেশনের কাছে মৃত্যু হয় তাঁর।”
উল্লেখ্য, হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ২০টি দেশ এই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব। তার আঁচেই উত্তপ্ত বাংলাও। গত বৃহস্পতিবার থেকে হাওড়ার বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা জারি রয়েছে। ওইদিন একটানা প্রায় এগারো ঘণ্টা ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। একের পর এক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে কার্যত গাড়ির লাইন লেগে যায়।
শুক্রবারও ধূলাগড় ও উলুবেড়িয়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়। পুলিশ কিয়স্কে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বেশ কয়েকটি মোটরবাইক ও সাইকেল। তৃণমূল ও বিজেপির কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। ডোমজুড় থানাতেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।
ধূলাগড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়। বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। এদিকে, অবরোধের জেরে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবাও। হাওড়া-খড়গপুর শাখার একাধিক স্টেশনে অবরোধ হয়। তার ফলে থমকে যায় লোকাল ট্রেন। দুরপাল্লার ট্রেন যাতায়াতেও প্রভাব ফেলে অবরোধ। বাধ্য হয়ে রাতেও হাওড়া স্টেশনে থাকতে হয় বহু যাত্রীকে।
ইতিমধ্যেই টাটানগর-হাওড়া, পুরুলিয়া-হাওড়া, ভদ্রক-হাওড়া এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দুরপাল্লার ট্রেনের গতিপথও বদল করা হয়েছে। অশান্তির আবহে আগামী ১৩ জুন ভোর ৬টা পর্যন্ত হাওড়াজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Be the first to comment