নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল সোমবার রাজ্য বিধানসভায় বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধনী বিলের ভোটাভুটি ঘিরে। দেখা গেল, বিলের সমর্থনে শাসকদলের ভোট পড়েছে ১৮২টি। বিলের বিরুদ্ধে বিজেপির ভোট মাত্র ৪০টি। অথচ বিধানসভায় হাজির ছিলেন ৫৭ জন বিজেপি বিধায়ক। তা নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক তৃণমূল।তাদের দাবি, এই সংখ্যা যে আরও কমেনি, সেটাই বিজেপির ভাগ্য। বাকি ১৭ জনকে নিয়ে রহস্যও দেখা দেয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রশ্ন তোলেন, কারা এই ১৭ জন বিধায়ক, যারা বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিলেন না? বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, বিধানসভার ভিতরেও শাসকদল ছাপ্পা ভোটের কারবার করেছে। তাঁরা আদালতে যাবেন বলে জানান শুভেন্দু।
দিনের শেষে গোটা পরিস্থিতি বদলে যায়। দেখা যায়, কোনও কারণে গণনায় ভুল হয়ে গিয়েছে। বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৬৭টি। বিলের বিরুদ্ধে বিজেপির ৫৫টি ভোট পড়েছে। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিধানসভার এক কর্মীর ভুলেই এই ঘটনা। তা নিয়ে তিনি তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন। যিনি ভুল করেছেন তিনি লিখিত ভাবে ক্ষমাও চেয়ে নেন। স্পিকার বলেন, এরকম ভুল করা ঠিক নয়। পরিষদীয় কাজকর্মে অভিজ্ঞ এমন অনেকেই বলছেন, রাজ্য বিধানসভায় এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। আগে কখনও এরকম ঘটেছে কি না কেউই তা মনে করতে পারেননি।
এর আগে বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য জানান, বিজেপির ৫৭ জন বিধায়ক হাজির ছিলেন। অথচ বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিলেন ৪০ জন। বাকি এই ১৭ জন কারা, যাঁরা এই রহস্য সৃষ্টি করেছেন? প্রশ্ন তুলেছেন ব্রাত্য বসু। এদিন রাজ্যপালের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধনী বিল আনা হয়। বিলটি পেশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। বিরোধী বিজেপি আলোচনা শেষে ভোটাভুটি চায়। দেখা যায়, বিলের পক্ষে পড়েছে ১৮২টি ভোট। বিপক্ষে পড়েছে ৪০টি ভোট। অথচ, হাজির ছিলেন ৫৭ জন বিজেপি বিধায়ক।
দাবি পাল্টা দাবির মধ্যেই বিতর্ক উসকে দেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভার বাইরে তিনি বলেন, ৪০ কেন? একটু ঝাঁকা দিলে এই সংখ্যা আরও কমে যাবে। আসলে বিরোধী দলের যিনি নেতা, তাঁর নিজের প্রতি নিজেরই কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। বিধানসভার বাইরে ধরনা না দিয়ে তিনি বরং নিজের দলের বিধায়কদের একটু দেখুন। রাতে অবশ্য গোটা পরিস্থিতি পালটে যায়।
Be the first to comment