নির্বাচন পরবর্তী হিংসা মোকাবিলা, মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই ও সংগঠন ধরে রাখতে গিয়ে রাজ্যে দলের অবস্থা ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বহস্পতিবার আর্থিক সাহায্যের দাবি জানালেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। সংগঠনের বেহাল পরিস্থিতি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হলেও মুখ খুলতে চাননি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে নাড্ডা রাজ্যে সংগঠন নিয়ে অসন্তোষপ্রকাশ করেন বলে সূত্রের খবর। বুধবার সংঘের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সুকান্ত, অমিতাভ, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, অমিত মালব্যরা।
রাজ্য সফরে গিয়ে সংগঠনের বেহাল পরিস্থিতির প্রথম আঁচ পান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লি ফিরেই জেপি নাড্ডার সঙ্গে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তাঁকেও বঙ্গ সফরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সূত্রের খবর, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষের সঙ্গে বঙ্গ সফরে গিয়ে পরিস্থিতি হাতেনাতে ধরে ফেলেন নাড্ডা। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সংঘের কাছে পাঠানো রিপোর্ট যে মনগড়া ছিল বুঝতে সময় লাগেনি সর্বভারতীয় সভাপতির। কারণ বাংলার সংঘের পরিবারের তরফে পাঠানো রিপোর্টের সঙ্গে একাধিক অসঙ্গতি দেখতে পান শাহ, নাড্ডা ও সন্তোষরা। এরপরেই রাজ্য নেতাদের দিল্লিতে তলব করে আলোচনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, পাঁচজনকে ডেকে পাঠানো হলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আসতে রাজি হননি। বৃহস্পতিবার যখন সুকান্ত, অমিত ও অমিতাভরা নাড্ডার সঙ্গে কথা বলছেন তখন দিলীপ ঘোষ বিধানসভায় বিধায়কদের সঙ্গে গল্পগুজবে ব্যস্ত ছিলেন। রাজ্য থেকে আসা প্রতিনিধি দলকে এড়িয়ে যেতেই দিলীপের না আসার সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। যদিও রাজ্য সভাপতি জানান, ব্যস্ততার কারণেই তিনি আসতে পারেননি।
সুকান্তরা মুখে আর্থিক সংকটের কথা বললেও আলোচনার সিংহভাগ অংশই সংগঠন নিয়েই হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সাধারণত, সব রাজ্যেই সংঘের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সংগঠন পরিচালিত হয়। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বাংলায় সংঘের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় বঙ্গ বিজেপির। যেভাবে রাজ্যে দল পরিচালিত হচ্ছে তা নিয়ে একাধিকবার সংঘের মুখপত্রে সমালোচনা করা হয়। এভাবে বাংলায় দল পরিচালিত হলে ভবিষ্যতে মানুষের সমর্থন ধরে রাখা কঠিন হবে, পাশাপাশি নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব বাড়বে বলে সতর্ক করা হয়। সেই ভবিষ্যৎ বাণী মিলে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি বাংলার সংঘ পরিবারের তরফে রিপোর্ট দেওয়া হয়। এরপরই বাংলা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভাবনাচিন্তা শুরু বলে সূত্রের খবর।
Be the first to comment