প্রতিরক্ষা বাহিনীতে অগ্নিপথ প্রকল্পে জওয়ান নিয়োগ ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। প্রাক্তন সেনাদের একাংশ তো বটেই, সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এবার চুক্তির ভিত্তিতে সেনা নিয়োগ ঘিরে প্রশ্ন উঠল বিজেপির অন্দরেই। গেরুয়া শিবিরেরই বরুণ গান্ধী এবার কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলে চিঠি লিখলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে। বরুণের আশঙ্কা, চুক্তি সেনা নিয়োগের ফলে দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসন্তোষ আরও মাথাচাড়া দেবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে লেখা চিঠিতে বরুণ গান্ধী জানিয়েছেন যে, দেশের তরুণ প্রজন্ম প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আমূল পরিবর্তন সম্পর্কে বহু প্রশ্ন এবং সন্দেহ তাঁর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের প্রস্তাব, অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগপ্রাপ্তদের ৭৫ শতাংশ চার বছরের মধ্যেই অবসর নেবে। এরা কোনও পেনশন বা বাড়তি সুবিধা পাবে না। তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ কী? তবে এদিন টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় বরুণ গান্ধী আন্দোলনকারীদের হাত জোড় করে বিনম্র থাকার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি জানান, তিনি তাঁদের সঙ্গে সবসময় আছেন। তবে তাঁদের ধৈর্য ও লোকতান্ত্রিক মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখার আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। তিনি লেখেন, সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ সব যুবদের অধিকার।
বরুণ গান্ধী আরও জানিয়েছেন, যেহেতু ৭৫ শতাংশ সেনা চার বছর পরে ‘বেকার’হয়ে যাবে এবং তাদের সংখ্যা প্রতি বছর ক্রমেই বাড়তে থাকবে। যা যুবকদের মধ্যে আরও অসন্তোষের জন্ম দেবে। তাঁর প্রশ্ন, চার বছরে অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের ভবিষ্যৎ কী? কারণ কর্পোরেট সেক্টর ১৫ বছর পরে অবসর নেওয়া নিয়মিত সামরিক কর্মীদের নিয়োগেই তেমন আগ্রহ দেখায় না। তাহলে চার বছরের অবসরের পর চুক্তি সেনাদের নিয়োগে কর্পোরেটরা আগ্রহ দেখাবে তা ভাবা ভূল হবে।
বরুণের দাবি, চার বছরের চাকরি চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ সেনাদের শিক্ষাকে ব্যহত করবে, এবং তারা অন্য চাকরি বা আরও শিক্ষা পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হবে। কারণ চার বছরের অবসরের পর একই ধরনের যোগ্যতায় এই সেনারা অন্যদের চেয়ে বয়স্ক হবে, অন্যদিকে পেনশন না থাকায় আর্থিক অসুবিধারও সম্মুখীন হবে। বিজেপি সাংসদের আরও আশঙ্কা, মাত্র ছয় মাসের প্রাথমিক প্রশিক্ষণের এই সেনারা বিদ্যমান রেজিমেন্টাল গঠনে ব্যাঘাতের কারণ হতে পারে।
রাজনাথ সিংকে লেখা চিঠিতে বরুণ জানিয়েছেন, যেহেতু ‘অগ্নিবীরদের’ ৭৫ শতাংশ চার বছরে অবসর নেবেন। তাই এই প্রকল্পের ফলে প্রশিক্ষণের খরচও বাড়বে। প্রতিরক্ষা বাজেটের উপর অপ্রয়োজনীয় বোঝা বইতে হবে। তাঁর মতে, সরকারের উচিত বেকার যুবকদের স্বার্থকে সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং এই উদ্যোগের বিভিন্ন নীতিগত দিক তুলে ধরা।
অগ্নিপথ প্রকল্প ঘিরে ইতিমধ্যেই বিহার অগ্নিগর্ভ হয়েছে। ভাঙচুর, সড়ক, রেল অবরোধ চলছে। সেনায় পুরনো নিয়োগ প্রক্রিয়া ফেরাতে দাবি তুলেছে চাকরিপ্রার্থীরা।
Be the first to comment