GTA নির্বাচনে ভোটই দিলেন না গুরুং, নেপথ্যে কি গভীর পরিকল্পনা?

Spread the love

১০ বছর পর পাহাড়ে চলছে ভোট। কিন্তু তাতে শামিল হলেন না বিমল গুরুং। ভোট দিলেন না তিনি। তবে কি স্বঘোষিত পাহাড়ের ‘সম্রাট’ বিমল গুরুং  পাহাড়েই ব্রাত্য, নাকি অতীত? রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্নই। তবে এই নির্বাচনের আড়ালে অন্য কোনও ছক রয়েছে গুরুয়ের! গোপনে সন্ধি করে আপাতত কোনও দলকে তাঁর সমর্থকদের ভোট তুলে দিয়ে হতে চান ‘কিং মেকার’! সেই সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দেওয়ার নয়। কারণ, গুরুং জিটিএ-বিরোধিতা করলেও সুকৌশলে ভোট বয়কটের পরিচিত পথে হেঁটে কখনই রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে যেতে চাননি। আবার রাজ্যের সঙ্গে তাঁর যে আগের মতো ‘মোহাব্বত’ রয়েছে, সেটাও বলা যায় না।

একসময় গুরুংয়ের ছায়াসঙ্গী অনিত থাপা, বিনয় তামাং এবার জিটিএ নির্বাচনের অন্যতম তারকা। রয়েছেন অজয় এডওয়ার্ডও। কিন্তু পাহাড়ে নির্বাচন, অথচ পাহাড়ে নেই বিমল গুরুং, সেটা যেন অবিশ্বাস্য ঠেকছে অনেকের কাছেই।

একসময়ে পাহাড়ে নির্বাচন মানেই সুবাস ঘিসিং, পরবর্তীতে বিমল। কিন্তু এখন সবই অতীত। এককথায়, খরচের খাতায়। সূত্রের খবর, বিমল গুরুং সিংমারিতে দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত আসছেন। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। কিছু সামাজিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন।

কিন্তু জিটিএ নির্বাচনে নেই। কিন্তু নির্বাচনে নেই বলে কোনও খোঁজ রাখছেন না, এমনটা ভাবার কারণ নেই বলেই পাহাড়ের প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের মত। আপাতত তাঁর কিছু করণীয় নেই, তাই বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য হয়েছেন। দলের কিছু কর্মী, অনুগামী ছাড়া সাধারণ মানুষ আগের মতো আর তাঁর পাশে নেই, এটা বুঝেই আমরণ অনশনের ‘নাটক’ করে স্বেচ্ছা নির্বাসনের পথ বেছে নিয়েছেন। তাই আজ নির্বাচনে পাহাড়ে হলেও গুরুংয়ের প্রকাশ্য কোনও ভূমিকা থাকছে না।

প্রতিটি নির্বাচনে যাঁকে রণকৌশল ঠিক করতে দিতে দেখা গিয়েছে, তিনি এবার হালকা মেজাজে সিংমারিতে সময় কাটাবেন। দেখবেন, তাঁর হুকুম ভাঙার ঝড় কেমন আছড়ে পড়েছে। শনিবার ঘনিষ্ঠ মহলে গুরুং বলেছেন, কে জিতল, কে হারল তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই তাঁর। জিটিএকে তিনি বিশ্বাস করে না। কিন্তু সত্যি কি তাই? তিনিই তো এক সময় জিটিএ-র চেয়ারম্যান ছিলেন। তাই, অনেকেই বলছেন, আড়ালে অন্য কোনও ছক আছে।

কিন্তু কি সেই ছক? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাহাড়ের এক প্রবীণ নেতার কথায়, “বিমল চুপচাপ থাকবেন না। তিনি কোনও একটি দলে তাঁর অনুগামীদের ভোট তুলে দিয়ে ‘কিং মেকার’ হওয়ার চেষ্টায় থাকবেন।” তেমনটা হলে সেই দল কোনটা হতে পারে? বিমল অনিত থাপা অথবা বিনয় তামাংয়ের পাশে যে থাকবেন না, সেটা স্পষ্ট। বাকি থাকলেন অজয় এডওয়ার্ড। বিমল কি তাহলে আড়ালে থেকে তাঁকেই সাহায্য করবেন!

ওই অনুমানের নিষ্পত্তি হবে ভোটের ফলাফলে। তবে এবারের নির্বাচন যে ম্যাড়ম্যাড়ে, সেটা বলছেন অনেকেই। চকবাজারের বাসিন্দা অনুপমা ছেত্রী বলেন, “পাহাড়ের নির্বাচনে বিমল গুরুং নেই, এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। ওর হুইপ জারি, ওর দাপট ছাড়া পাহাড়ে নির্বাচনে যেন প্রাণ থাকে না।” আবার উলটো কথাও রয়েছে। যেমন, ঘুমের বাসিন্দা স্মরণ শর্মার কথায় “কোনও হুইপ ছাড়া অনেকদিন পর মানুষ নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে যাবেন। এটা কি কম বড় প্রাপ্তি!”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*