অশোক স্তম্ভ বিতর্কে মুখ খুলল কংগ্রেস। নতুন সংসদ ভবনের ছাদে যে অশোক স্তম্ভটির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তা দেশের জাতীয় প্রতীকের নির্লজ্জ অপমান ছাড়া আর কিছু নয়। নতুন অশোক স্তম্ভটির প্রতিকৃতি সম্পূর্ণ পরিবর্তন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে সোনিয়া গান্ধির দল।
গতকাল, সোমবার ব্রোঞ্জের তৈরি জাতীয় প্রতীক অশোক স্তম্ভের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর ওজন ৯৫০০ কিলোগ্রাম, উচ্চতা ৬.৫ মিটার। একে ধরে রাখার জন্য সাড়ে ছ’হাজার কিলোগ্রাম ওজনের ইস্পাতের কাঠামো তৈরি হয়েছে। ক্লে মডেলিং, ব্রোঞ্জ ঢালাই, পালিশ হওয়া-সহ মোট আটটি ধাপে এটি তৈরি করা হয়।
বিতর্ক এই নতুন স্তম্ভটি নিয়েই। পূর্বতন বা প্রকৃত অশোক স্তম্ভে সিংহের মাথাটি তার দেহের তুলনায় বড় । যেমনটি সাধারণত হয়ে থাকে। কিন্তু, নতুন মূর্তিটির সিংহগুলির মাথা অত্যন্ত ছোট। দেখে মনে হবে, চিতার মাথার আকারে তৈরি করা মূর্তি। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই রূপান্তরিত অশোক স্তম্ভ কি কারও নির্দেশে হয়েছে! নাকি অপদার্থ শিল্পীদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে কয়েক কোটি টাকা উলুখাগড়ার বনে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে!
এই নতুন অশোক স্তম্ভ সামনে আসার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতা থেকে ইতিহাসবিদ সকলেই। ইতিহাসবিদ এস ইরফান হাবিব নতুন সংসদ ভবনের উপরে জাতীয় প্রতীক উন্মোচনে আপত্তি জানিয়েছেন। হাবিব বলেন, “আমাদের জাতীয় প্রতীকে এমন হস্তক্ষেপ করা অপ্রয়োজনীয় ছিল। কেন সিংহের মুখে হিংসা ও ক্ষোভ থাকবে?”
প্রাক্তন আপ নেতা তথা আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ লিখেছেন, গান্ধি থেকে গডসে, জাতীয় স্মারকে সিংহ থেকে সংসদ ভবনে বসানো সিংহের ক্রোধ ও দাঁত বের করা হিংসার বহিঃপ্রকাশই আমাদের মোদির আধুনিক ভারত। প্রশান্ত ভূষণের টুইটের জবাবে আরও একজন মশকরা করে লিখেছেন, আগের সিংহের কেশরগুলি দেখুন, কীরকম ব্যারিস্টারের উইগে মতো। আর এটার দেখুন, দেখে মনে হবে যেন নাগা সাধুর জটা! কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, নরেন্দ্র মোদিজি আপনি দয়া করে সিংহের মুখটা দেখুন! এটা কী সারনাথের মূর্তি, নাকি গুজরাতের গির জঙ্গলের সিংহের বিকৃত রূপ?
Be the first to comment