তৃণমূল সমর্থক কর্মীদের বেছে বেছে বিভিন্ন জায়গায় মেট্রো কর্তৃপক্ষ বদলি করছে বলে অভিযোগ উঠল। বুধবার কলকাতার মেট্রো রেল ভবনের সামনে এক সভায় কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তিনি বলেন, এটা গুজরাত বা উত্তরপ্রদেশ নয়। এটা বাংলা। বাংলার মানুষকে অপমান করলে বা ঘাটালে পরিণাম ভালো হবে না। তিনি জানান, এখন থেকে মেট্রোর নির্দিষ্ট কয়েকজন অফিসারের কাজকর্ম ও গতিবিধির উপর নজর রাখবে তৃণমূল। বেনিয়ম কিছু দেখলেই তৃণমূল রুখে দাঁড়াবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মদন। বৃহস্পতিবার থেকে শহরের প্রত্যেকটি মেট্রো স্টেশনের সামনে বিক্ষোভ চলবে বলেও জানান কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক।
সোমবার ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর সম্প্রসারণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রবিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মতো কয়েকজনের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি দিয়ে আসা হয়। এর প্রতিবাদে তৃণমূল ওই অনুষ্ঠান বয়কট করে। সেদিনই মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে চলে যান।
মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে বলে বুধবার প্রতিবাদে শামিল হয় তৃণমূল। মেট্রো রেল ভবনের সামনে জমায়েত করে তারা। সেখানে প্রধান বক্তা ছিলেন মদন মিত্র। তিনি বলেন, সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের প্রকল্প মমতা পাশ করিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী থাকাকালীন। এটা মমতার স্বপ্নের প্রকল্প। অথচ তারই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটা মুখ্যমন্ত্রীকে অপমানের শামিল।
মেট্রোর এই প্রকল্প মমতার ব্রেনচাইল্ড বলে তৃণমূলের প্রচারকে আগেই খারিজ করেছে সিপিএম। তাদের বক্তব্য, ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তখনকার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিপিএমের দাবি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, তখনকার পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী, পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য প্রমুখ উদ্যোগ নিয়ে ওই প্রকল্প অনুমোদন করে আনেন। সিপিএমের অভিযোগ, বরং তখন প্রকল্প বানচাল করার জন্য তৃণমূল উঠেপড়ে লেগেছিল। কেন্দ্র কেন এই প্রকল্পের জন্য টাকা দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। সেই সময় প্রণববাবুকে সিপিএমের পদলেহনকারী বলেও তৃণমূল কটাক্ষ করেছিল।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও এদিন বলেন, এর জন্য মমতার কোনও কৃতিত্ব নেই। যদি কৃতিত্ব কাউকে দিতে হয়, তা দিতে হবে বুদ্ধবাবুকে। তিনি বলেন, মেট্রোর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে ডাকতে হবে, তার কোনও মানে নেই। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে কেন ডাকা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা।
Be the first to comment