পঞ্চায়েত ভোটের আগে একাধিক জেলায় সাংগঠনিক রদবদল সেরে ফেলল তৃণমূল কংগ্রেস। বেশ কিছু জেলায় সভাপতি এবং চেয়ারম্যান পদে পুরনোদের সরিয়ে নতুন মুখ আনা হয়েছে। সাংগঠনিক স্তরে যে পরিবর্তন হবে, আগের তার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের অপসারিত মহাসচিব এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডির হাতে গ্রেফতারের পর ঘটানো হল সাংগঠনিক রদবদল।
কোচবিহারে জেলা সভাপতি পদে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে। সেখানে নতুন সভাপতি করা হয়েছে অভিজিৎ দে ভৌমিককে। কোচবিহারে শাসকদলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল তীব্র। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম, গিরিন্দ্রনাথ বর্মণ, উদয়ন গুহের মতো নেতারা পারস্পরিক কোন্দলে জর্জরিত। গত কয়েক বছরে এই জেলায় ঘনঘন চেয়ারম্যান এবং সভাপতি বদল করা হয়েছে। দার্জিলিং পার্বত্য জেলায় সভাপতি করা হয়েছে সাংসদ শান্তা ছেত্রীকে। উত্তর দিনাজপুরে জেলা সভাপতি করা হয়েছে কানহাইয়া আগরওয়ালকে।
মুর্শিদাবাদ জেলায় বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে শাওনি সিংহ রায়কে। নদিয়া দক্ষিণে প্রাক্তন মন্ত্রী রত্না ঘোষকে সরিয়ে সভাপতি করা হল দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়কে। রত্নার বিরুদ্ধে গত বিধানসভা ভোটে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ ছিল। ভোটের পরেও তাঁর বিজেপি যোগ নিয়ে দলের অন্দরে বিস্তর অভিযোগ ছিল। দলীয় সূত্রের খবর, সেই কারণেই রত্নাকে সরানো হল। উত্তর ২৪ পরগনায় দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ছিলেন পার্থ ভৌমিক। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই পদে কাকে বসানো হবে, তা পরে জানানো হবে বলে ঘোষণা করেছে দল।
বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায়কে সরিয়ে নতুন সভাপতি করা হয়েছে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। অশনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। এই জেলায় চেয়ারপার্সন হলেন হাবরা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তপতী দত্ত। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়ে এলেন বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিশ্বজিৎ দাস। সম্প্রতি এই দলবদলু বিধায়ক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সারদা মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। দলে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী বলতে শুরু করেছে, নেত্রীকে ‘সারদা মা’ বলার পুরস্কার দেওয়া হল বিশ্বজিৎকে।
তৃণমূলের কলকাতা উত্তর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান ছিলেন তাপস রায়। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর সেই পদটি ফাঁকা রাখা হয়েছে আপাতত। হুগলি শ্রীরামপুরে জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে অরিন্দম গুঁইকে। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছে স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সভাপতি ছিলেন অজিত মাইতি। সেখানে নতুন সভাপতি হয়েছেন সুজয় হাজরা। অজিতকে করা হয়েছে কোঅর্ডিনেটর। পশ্চিম বর্ধমানেও জেলা সভাপতি কে হবেন, তা পরে জানানো হবে। তৃণমূলের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষেত্রেই কোঅর্ডিনেটর পদটি রাখা হয়েছে।
Be the first to comment