সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পরাশ্রয়ী’ রাজনীতিক, ফের বিস্ফোরক মন্তব্য তাপস রায়ের

Spread the love

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম তাপস রায়। উত্তর কলকাতার দুই নেতার বিবাদে অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলের। যত দিন যাচ্ছে ততই যেন সুদীপের প্রতি সুর চড়ছে শাসকদলের বিধায়ক তাপস রায়ের। পালটা আসছে সাংসদের তরফ থেকেও। কোনওপ্রকার রাখঢাক না করে দুই নেতার বিবাদ একেবারে ‘তু তু ম্যায় ম্যায়’ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।

শুক্রবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে তাপসের কটাক্ষ ছুঁড়েছিলেন। বলে দিয়েছিলেন,”তিনি যে বৈঠক করেন, তাতে নরেন্দ্র মোদি তাঁর সঙ্গে বসেন। হাতি চলে বাজার কুত্তে ভৌকে হাজার…” অর্থাৎ নিজেকে ‘হাতি’ এবং তাপসকে ‘কুত্তা’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন সুদীপ। তারই জবাবে শনিবার তাপস রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেললেন। বলে দিলেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন পরাশ্রয়ী রাজনীতিক। সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি হয়েছেন বটে, কিন্তু দলের নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই।

তাপস রায়ের বক্তব্য, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে সাদা হাতির মতো। সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। তৃণমূলের কর্মীদের ঘাড়ে চেপে সাংসদ হয়েছেন। তিনি যে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন, সেটাও তৃণমূলে কর্মীদেরই বদান্যতায়। দলের প্রতি সুদীপের আনুগত্য নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছেন তাপস। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় ৬ বছর তৃণমূলে ছিলেন না। এমনকী তৃণমূল দলটা ছ’মাসও টিকবে না বলেও উপহাস করেছিলেন। পরে সেই সুদীপকেই তৃণমূল কর্মীদের ঘাড়ে চেপে সংসদে যেতে হয়েছে।

তাপসের অভিযোগ, গত আড়াই বছর সেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে কথাই বলেননি সুদীপ। ইডি-সিবিআই নিয়ে কোনও প্রতিবাদ নেই। রুজিরার হেনস্তা নিয়ে কোনও প্রতিবাদ নেই। ধারাবাহিকভাবে শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে আসছেন, তারপর তাঁর সঙ্গে একই জায়গায় উপস্থিতি কাম্য নয়। এতে দলের কর্মীরা আঘাতপ্রাপ্ত হন।

পাশাপাশি কর্মীদের কোনও অপমান যে তিনি সহ্য করবেন না সেটাও এদিন হুঁশিয়ারির সুরে শুনিয়ে দিয়েছেন তাপস। সেই সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পাঁচবারের বিধায়ক। কোনও কালো দাগ তাঁর নামের পাশে নেই। এমনকী হেফাজতেও থাকতে হয়নি।

এছাড়া উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে তিনিই সুদীপের পূর্বসূরি। আসলে তাপস এবং সুদীপের বিবাদের কারণ ওই উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদটিই। সুদীপের আগে ওই পদে তাপসই ছিলেন। কিন্তু সাংগঠনিক রদবদলের পর সেই পদ খোয়াতে হয় তাঁকে। সুদীপ সভাপতি হতেই তাপসকে পুরোপুরি ব্রাত্য করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আর সেটাই তাঁর ক্ষোভের আসল কারণ বলে মনে করছে এরাজ্যের শাসকদল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*