শুক্রবার সকাল দশটার সময়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। কিন্তু সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারল না প্রশাসন। অভিযোগ তুললেন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী। আন্দোলনকারীদের কেন ই-মেলে নোটিস পাঠানো হয়েছিল, প্রশ্ন তুললেন আইনজীবী।
মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য, “এই যে ছেলেমেয়েগুলো, যাঁদেরকে তুলে দেওয়া হল, তাঁদের নাকি কপি ইমেলে দেওয়া হয়েছে। আচ্ছা বলুন তো, আপনার বাড়ির সামনে বসে আছে, তাকে আপনি হাতে গিয়ে কপি দেবেন নাকি ইমেলে দেবেন?” তাঁর আরও বক্তব্য, “সঠিকভাবে রাজ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলত, এক জনও টেট পাশ প্রার্থী রাস্তার পাশে বসে থাকতেন না। প্রত্যেকেই শিক্ষকতা করতেন। দুর্ভাগ্য হল কিছু মানুষ চুরি করেছে, তাই এঁদের চাকরি গুলো চুরি হয়ে গিয়েছে। চোরেরা চায় না এই চুরি গুলো জনসমক্ষে আসুক।”
আরেক আইনজীবীর বক্তব্য, “এই পর্ষদ কেন স্পষ্ট করে বলছে না, চাকরিপ্রার্থীদের দাবিগুলিকে আমরা মান্যতা দিচ্ছি। এই কথাটা স্পষ্ট করে বলতে পারছে না? আলোচনা করার দায়িত্ব কার? মাথা ঝুকানোর দায়িত্ব কার? আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আপনি মামলা করছেন? রাস্তা কারোর বাবার নয়? অনুমতি নিতে হয় না আন্দোলন করতে গেলে…”
টানা ৮৪ ঘণ্টা। হকের চাকরির দাবিতে করুণাময়ীতে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন তুলতে, আর তাঁদের দাবিকে অন্যায্য বলে দাবি করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ মামলা করেছিল হাইকোর্টে। ৯ অক্টোবর থেকে পর্ষদের অফিস এপিসি ভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এই ধারা বলবৎ রয়েছে এই অফিস থেকে কিছুটা এগিয়ে এসে বেসরকারি হাসপাতালের সামনেও। কিন্তু সেখানে ধরনা চলছে। বৃহস্পতিবার সকালে এই মামলার শুনানি চলে বিচারপতি লপিতা মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। এর প্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল ১৪৪ ধারা মেনে চলতে হবে।
এরপরও আন্দোলন চলছিল। পাল্টা হাইকোর্টে মামলা করেন আন্দোলনকারীরাও। পর্ষদের মামলা সংক্রান্ত কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্য়ালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়েরের অনুমতি চান টেট উত্তীর্ণরা। শুক্রবার দশটায় ছিল শুনানি। কিন্তু তার আগে মধ্যরাতেই এই অতর্কিত অপারেশন। মাত্র আধ ঘণ্টা। পুলিশি ধরপাকড়ে ছত্রভঙ্গ হলেন আন্দোলনকারীরা।
Be the first to comment