অবশেষে সব বিতর্কে জল ঢাললেন তিনি নিজেই। বুঝিয়ে দিলেন “গেরুয়া” কারও পৈতৃক সম্পত্তি বা পেটেন্ট নয়। এই রং ত্যাগের রং, সন্ন্যাসীদের রং, এই রং স্বামীজীর রং। ঐতিহাসিক কনসার্ট থেকে নাম না করে গানের ভাষাতেই কষে থাপ্পড় মারলেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, অমিত মালব্যদের। গেরুয়া পাকড়ি পরে কলকাতার অ্যাকোয়াটিকায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা পারফর্ম করে দর্শকদের মাতালেন বাংলার গর্ব, দেশের গর্ব অরিজিৎ সিং। গানে গানে কড়া জবাব দিলেন বিজেপিকে।
কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে অরিজিৎ সিং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে গান গাইতে গিয়ে ”রং দে তু মোহে গেরুয়া…” গেয়েছিলেন। যেহেতু মঞ্চে শাহরুখ খান ছিলেন, তাই বলিউড বাদশাকে সম্মান জানিয়ে তারই একটি ছবির এই গান গিয়েছিলেন অরিজিৎ। আর তা নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক।
কাকতালীয়ভাবে ওই সময়ে ইকো পার্ক থেকে তাঁর কনসার্ট সরানো নিয়ে খামোখা বিতর্ক উস্কে দেয় বঙ্গ বিজেপির কিছু নেতা। ওই সময় শুভেন্দু-দিলীপ-অমিত মালব্যদের দাবি ছিল, “সিনেমা উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে গেরুয়া গাওয়ার জন্যই ইকো পার্কে বাতিল করা হয়েছে এই শো।” যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা।
যদিও তাঁকে নিয়ে তৈরি এই যাবতীয় বিতর্কে একটিবারের জন্যও মুখ খুলতে দেখা যায়নি অরিজিৎ সিংকে। কিন্তু, শনিবার অ্যাকোয়াটিকার কনসার্ট থেকে অবশেষে “গেরুয়া বিতর্ক” নিয়ে ভরা কনসার্টের মঞ্চে দাঁড়িয়েইতাৎপর্যপূর্ণ
মন্তব্য করেন গায়ক।
সম্ভবত বিজেপির বাজার গরম করা বিতর্কের জবাব দিতেই ফের মঞ্চে ”রং দে তু মোহে গেরুয়া…” গানটি করেন অরিজিৎ সিং। এরপরেই হাততালির বন্যা বয়ে যায়। মঞ্চে গিটার হাতে অরিজিতের হয়ে কথা বলে তাঁর গান। কিন্তু, এদিন গেরুয়া গান শেষ করার পর অরিজিৎ বলেন, “এই গান নিয়ে প্রচুর জল্পনা কল্পনা হল। কিন্তু, গেরুয়া রংটা তো সন্ন্যাসীদের রং রে বাবা! স্বামী বিবেকানন্দও তো গেরুয়া পরতেন। তিনি যদি কোনও দিন সাদা পরতেন সেক্ষেত্রেও কি এত বিতর্ক হত?”
মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। নাম না করে অমিত মালব্য, শুভেন্দু অধিকারীদের অরিজিৎ বুঝিয়ে দিলেন গেরুয়া রং বিজেপির পৈতৃক সম্পত্তি নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়ই বলেন, গেরুয়া প্রীতি, হিন্দুত্ব বিজেপির থেকে শেখার নেই। তার জন্য স্বামী বিবেকানন্দ আছেন। অরিজিৎ যেন এদিনের কনসার্ট থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষাতেই জবাব দিলেন গেরুয়া শিবিরকে।
Be the first to comment