নির্বাক ছবির যুগেও প্রেম ছিল পর্দায়। সে প্রেমে চোখে চোখে কথা হত। সেই প্রেমালাপ বুঝতে অসুবিধা হত না কারোর। এখন অবশ্য যোগাযোগের নানা মাধ্যম। কিন্তু এই কালেও চোখে চোখে প্রেম দেখল আদালত। একেবারে মাখোমাখো প্রেম। তাও আবার দুই হেভিওয়েট জেলবন্দির। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে বন্দি রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলে রয়েছেন তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল শুনানিতে মুখোমুখি হন তাঁরা। আর সেখানেই প্রেমের জোয়ারে ভাসলেন দুজন।
২টো ৫০ মিনিটে প্রথমে স্ক্রিনে দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তারপরে আসেন অর্পিতা। প্রথমেই দুজন দুজনকে দেখে মুচকি হাসেন। জেলে যাওয়ার পর অর্পিতা অবশ্য বলেছিলেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে এদিন পার্থর বিরুদ্ধে তাঁর বিন্দুমাত্র অভিমান বা অভিযোগ আছে বলে মনে হয়নি। ইশারায় একে অপরের কাছে জানতে চান ভালো আছেন কি না। এরপরই পার্থ ইশারায় জানতে চান অর্পিতার খাওয়া হয়েছে কি না? পাল্টা একই প্রশ্ন করেন বান্ধবীও। পার্থ তাঁর কথা শুনতে পাচ্ছেন? জানতে চান অর্পিতা। উত্তরে পার্থ জানান, না শুনতে পাচ্ছেন না। অর্পিতাও অবশ্য পার্থর কথা শুনতে পাচ্ছিলেন না। শুধু দেখতে পাচ্ছিলেন। এর মাঝেই খুনসুটি করে অর্পিতাকে জিভ ভেঙান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এতোটা পড়েই যদি ভাবেন এখানেই ইতি, তাহলে ফিল্মি ভাষায় বলব পিকচার আভি ভি বাকি হ্যায়।
আরও প্রেম বাকি ছিল। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দিকে হার্ট সাইন বা লাভ সাইন দেখান পার্থ চট্টোপাধ্যায়! এতে লাজুক হাসেন অর্পিতা। ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলে। তিনটে দশ মিনিট নাগাদ অর্পিতা পার্থর কাছে জানতে চান তাঁর চা খাওয়া হয়েছে কি না? এই সময়ে পার্থ বুকের বাঁদিকে আঙুল দিয়ে কিছু লেখার কথা চেষ্টা করেন। তারপরেই দুজনে আবার হাসতে শুরু করেন। হঠাৎ করে পার্থ ডিসকানেক্ট হয়ে যান। উদ্বেগ্ন হতে দেখা দেয় অর্পিতাকে। কিছুক্ষণ পর ফিরে আসেন পার্থ। জানান চা খাচ্ছিলেন। এই সময় চুল সামনে আনেন অর্পিতা। মুচকি হাসির পার্থ। পার্থর গোঁফের তারিফ করেন তাঁর বান্ধবী। তরুণ যুগলের মতোই অনলাইনে দীর্ঘক্ষণ প্রেমালাপে মত্ত থাকেন পার্থ-অর্পিতা। এমনকী, অর্পিতা পার্থকে ঠোঁট দেখিয়ে ইশারায় কিছু বলেন। তাতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর অভিব্যক্তি, মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে না কি! এই গাঢ় প্রেমে রসভঙ্গ হয় সাড়ে তিনটে নাগাদ। তখন বলতে শুরু করেন আরেক ধৃত মানিক ভট্টাচার্য। সেই সময় অবশ্যই প্রেমালাপ বন্ধ করে শুনানিতে মন দেন দুজনে। অর্থাৎ মুখে তাঁরা যাই বলুন না কেন, দুজনের মধ্যে যে গভীর রসায়ন ছিল তা এদিনই স্পষ্ট।
Be the first to comment