রামনবমীর দিন হাওড়ায় অশান্তির ঘটনায় সরাসরি বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল। এমনকি গোটা ঘটনায় বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ইস্যুতেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে শাহের ফোন নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জানালেন, যে অশান্তির পরিকল্পনা দিল্লিতে বসে বিজেপি করেছিল তা কতদূর সফল খোঁজ নিতেই সুকান্ত মজুমদারকে ফোন করেছেন অমিত শাহ।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদারকে অমিত শাহের এই ফোনের প্রসঙ্গ উঠতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকারিভাবে সরকারের কোনও প্রতিনিধিকে তো উনি ফোন করেননি। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য বা কেন্দ্রের সরকারি কোনও পদে নেই। উনি শুধু মাত্র বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ। একইসঙ্গে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি। ফলে রাজনৈতিকভাবে এই ফোন উনি করেছেন। রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে প্রাক্তন সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি ফোন করে খোঁজ নিচ্ছিলেন, প্ল্যান ঠিকঠাক ভাবে সফল হোল কিনা।” একইসঙ্গে হাওড়ায় অশান্তির ঘটনায় যে অমিত শাহের যোগ রয়েছে এমন একটি আভাস দিয়ে এদিন অভিষেক বলেন, “২৭ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাত করলেন বিজেপি নেতা। এরপর ২৯ তারিখ শ্যামবাজারে তিনি বললেন, আগামী কাল টিভির পর্দায় নজর রাখুন। ৩০ তারিখ হাতে পিস্তল নিয়ে জল্লাদদের উল্লাস হল হাওড়ায়। আপনারা ক্রনোলজি বুঝুন।”
পাশাপাশি যে মিছিলকে ঘিরে অশান্তির ঘটনা ঘটে তার কোনও পুলিশি অনুমতি ছিল না প্রমাণ দিয়ে অভিষেক বলেন, “দুটো আলাদা মিছিল বেরিয়েছিল যাদের কোনও অনুমতি ছিল না এই দুই মিছিল মিলে গিয়ে এই ঘটনা ঘটায়।” অভিষেক নথি তুলে ধরে বলেন, দুটি মিছিলের আবেদন পুলিশের কাছে জমা পড়েছিল প্রথমটি ২১ মার্চ বিশ্বহিন্দু পরিসদের তরফে, দ্বিতীয়টি অঞ্জনি পুত্র সেনার তরফে। কিন্তু পুলিশের তরফে পাল্টা ৪টি শর্ত দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। যেখানে বলা হয়, ১. মিছিল শুরু করতে হবে ২.৩০ মিনিটে শেষ করতে হবে ৫ টায়। ২. মিছিলে যে সব সদস্য উপস্থিত থাকবে তাদের নাম সহ বিস্তারিত পুলিশকে জানাতে হবে। ৩. কোনও রকম উস্কানি মূলক শ্লোগান দেওয়া যাবে না, যা কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে। ৪. কোনও রকম অস্ত্র, মটরসাইকেল, ডিজে ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি আগের বছরের পুলিশের অনুমতি পত্র জমা দিতে বলা হয়। তবে এরপর আর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি ওরা। যা চাওয়া হয় তার একটাও জমা দেয়নি। সম্পূর্ণ অনুমতি ছাড়া এরা প্রতিটা জায়গায় বেআইনিভাবে মিছিল করেছে। ‘অনুমতি ছিল কিন্তু পুলিশকে জানিয়েছিলাম, পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি’ যা বলা হচ্ছে এটা সর্বৈব মিথ্যা। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
Be the first to comment