হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলে পিস্তল হাতে দেখা গিয়েছিল এক যুবককে। অবশেষে তাকে বিহারের মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করল হাওড়া পুলিশ। যুবকের নাম সুমিত সাউ। সে বহিরাগত এবং বিজেপির কর্মী বলেই জানা গিয়েছে। পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে সিআইডি’র হাতে তুলে দিয়েছে। শুরু হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ। উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যেখানে ওই যুবকের বিজেপি যোগ স্পষ্ট।
রামনবমীকে কেন্দ্র করে হিংসার মাঝেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সুমিত সাউ গ্রেফতার হতেই তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, বিজেপি মুঙ্গের থেকে দুষ্কৃতী এনে বাংলায় গোলমাল করছে। গ্রেফতারির ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে একের পর এক ছবি প্রকাশ্যে এনে কুণাল ঘোষ বিজেপির সঙ্গে ধৃত সুমিত সাউয়ের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক সামনে নিয়ে এসেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে রামনবমীতে বন্দুকধারী যুবক হাওরার সক্রিয় বিজেপি কর্মী। ছবিতে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে শুধু সেলফি তোলা নয়, এলাকায় রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন লাগতেও দেখা যাচ্ছে। আবার তারই হাতে বন্দুক। এই যুবকের সঙ্গে কোন কোন। বিজেপি নেতার যোগ আছে, কাদের কথায় সেদিন অশান্তি পাকিয়েছিল সুমিত, সেই ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্তের আর্জি করেছেন কুণাল।
কুণালের দাবি, রামনবমীর মিছিলে বিজেপি পরিকল্পনা করে গোলমাল বাধিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, যাঁদের দিয়ে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা হয়েছিল, তাঁদেরই একজনকে মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করেছে বাংলার পুলিশ। কুণাল বলেন, ‘‘প্রশ্ন হচ্ছে, মুঙ্গের বাহিনীকে হাওড়ায় এনে গন্ডগোল করাল কারা? এই বিজেপি। বিজেপি বার বার অস্বীকার করছে। বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। বিজেপি বড় বড় কথা বলছিল, কেন এখনও গ্রেফতার হল না! মুঙ্গের থেকে গ্রেফতার করে এনেছে সুমিত সাউকে। সে স্বীকার করেছে। ছবি মিলে গিয়েছে। কারা ওই মিছিলে তাঁকে ঢুকিয়েছিল? কাদের প্ররোচনায় মুঙ্গের থেকে এসে এখানে অস্ত্র নিয়ে ঢুকে গেল! আর কটা অস্ত্র ছিল? সিআইডি তদন্তে সমস্ত বেরিয়ে আসবে। বিজেপির একজন চক্রান্তকারীও যেন ছাড়া না পায়।’’
সম্প্রতি, রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় হাওড়ার শিবপুরের কাজিপাড়া এলাকা। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে দোকনপাট ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন লাগানো ও মিছিল লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। পরে তা ব্যাপক আকার নেয়। জারি হয় ১৪৪ ধারা। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। বিজেপির ইন্ধনেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ট্যুইটে লেখেন, “বিজেপি-র দাঙ্গাবাজি ফর্মুলা আবার চালু হয়েছে। সম্প্রদায়কে একে অপরের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া হচ্ছে। হিংসা ছড়াতে অস্ত্রের জোগান দেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করার জন্য। বিজেপির প্লেবুক থেকে একটি ক্লাসিক অপবিত্র ব্লুপ্রিন্ট!” সেই সঙ্গে এই যুবকের পিস্তল হাতে ছবিও পোস্ট করেন তিনি।
Be the first to comment