কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ মাঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার পরই, সভাস্থলে তৈরি বুথে শুরু হয়ে গেল গোপন ব্যালটে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই। যেখানে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষে তাঁর পঞ্চায়েত এলাকায় নিজের পছন্দের প্রার্থী গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নিধারণ করবেন। গোটা দেশে তৃণমূলের এই কর্মসূচি শুধু প্রথম নয়, এককথায় নজিরবিহীন। এদিন অভিষেক জনসভা থেকে ঘোষণা করেন, যদি গরমে লাইন দিয়ে ভোট দিতে কষ্ট হয়, তাহলে “একডাকে অভিষেক”-এর যে হেল্পলাইন নম্বর অর্থাৎ ৭৮৮৭৭৭৮৮৭৭ নম্বরেও মানুষ প্রার্থী নিয়ে তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। পরিচয় গোপন রাখা হবে।
দিনহাটায় জনসংযোগের প্রথম অধিবেশেন পঞ্চায়েতর প্রার্থী বাছাই নিয়ে বার্তা দেন অভিষেক। জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, ”গরমে সবার একটু কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আগামী ৫ বছর মানুষের পঞ্চায়েতের কথা মাথায় রাখতে একটু শুনতে হবে। দু-মাস বন্ধু-বান্ধব, সংসার সমস্ত কিছু ফেলে রেখে আপনাদের কাছে এসেছি। কোনও শাসকদল এভাবে সভা করে না। রাজনৈতিক কথা বলতে আসিনি। সারাবছর শোনেন রাজনৈতিক কথা শোনেন। আজ নিজেদের প্রার্থী নিজেরা বাছাই করবেন। আগামী ৫ বছর দলমত নির্বিশেষে আপনার পাশে কে থাকবে তার বিচার করুন আপনারাই।”
মঙ্গলেই শুরু হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন যাত্রা। নতুন রাজনৈতিক কর্মসূচি। এলো “তৃণমূলে নবজোয়ার”!
পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক দলের মাস্টার স্ট্রোক।
কোচবিহার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার সকালে প্রথমে বামনহাটের তাঁবুতে বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত দুই যুবক প্রেমকুমার বর্মন ও মোফাজ্জল হোসেনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক। কথা বলে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন অভিষেক।
এদিন বামনহাট তাঁবু থেকে বেরিয়ে স্থানীয় মাধাইকাল কালীবাড়ি মন্দিরের উদ্দেশে পায়ে হেঁটে রওনা হন অভিষেক। সেখানে পুজো দেওয়ার পরই সাহেবগঞ্জের সভায় যোগ দেন তিনি। এই মাধাইকাল কালীবাড়ি যাওয়ার সময় গ্রামের পথেই ”জনসংযোগ” সারলেন অভিষেক। মিশে গেলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। নিরাপত্তা বেষ্টনী টপকে তাঁর কাছে চলে আসা যুবক-যুবতীদের সঙ্গে সেলফিও তুললেন। কখনও আবার নিজেই এগিয়ে গেলেন স্থানীয়দের কাছে। তাঁদের অভাব অভিষোগ শুনলেন। তাঁকে হাতের কাছে পেয়ে স্থানীয়দের অভিযো, ”বাড়িঘর কিছু পাইনি।” জবাবে অভিষেক কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে বিঁধে বলেন, ”বাড়ির ৬০ শতাংশ টাকা কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয়। আর রাজ্য দেয় ৪০ শতাংশ। কেন্দ্র বাংলার টাকা আটকে রেখেছে। বার বার বলার পরেও টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়েছেন। কেন্দ্রকে সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।” এরপরই অভিষেকের আশ্বাস, ”কেন্দ্র টাকা না দিলে, একটা নির্দিষ্ট সময় পর বাড়ি করে দেবে রাজ্য সরকার-ই।”
মঙ্গলবার কোচবিহারে মোট ৪টি জনসভা রয়েছে অভিষেকের। যার প্রথমটি দিনহাটার সাহেবগঞ্জে ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এরপর সিতাইয়ের গোসাইমারি ও শীতলকুচিতে জনসভা করবেন অভিষেক। শেষে মাথাভাঙায় গ্রামবাংলার মতামত কর্মসূচি।
Be the first to comment