কালিয়াগঞ্জে বিহার থেকে লোক এনে অশান্তি বিজেপির! হামলাকারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

পণবন্দির বুদ্ধি আসে কোথা থেকে? মালদার স্কুলে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনাকে 'দিল্লির চক্রান্ত' অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর

Spread the love

কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা অস্বাভাবিক মৃত্যু এবং তার পরবর্তী ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “কালিয়াগঞ্জে পরিকল্পিতভাবে চক্রান্ত করেছে BJP। যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক। কিন্তু তারপর যা যা হয়েছে, সবটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। বাইরে থেকে লোক এনে জল্লাদগিরি করেছে বিজেপি।”

কালিয়াগঞ্জে নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ও তারপরে উত্তেজনা তৈরিতে পরিকল্পিত চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। ”এসব কিছুর নেপথ্য ষড়যন্ত্র কাজ করেছে। সাধারণ মানুষ এটা করতে পারে না। বিহার থেকে লোক এনে কালিয়াগঞ্জে তাণ্ডব চালিয়েছে বিজেপি। গুন্ডামি, জল্লাদগিরি করেছে। পুলিশের মেয়েদের গায়ে হাত তুলেছে। আগুন লাগিয়েছে, পাথর ছুঁড়েছে। পুরোটাই পরিকল্পিত।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেয়েটির জন্য আমাদেরও খারাপ লাগছে। পুরোটাই আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। মেয়েটার সঙ্গে ছেলেটার সম্পর্কও ছিল। সবটাই পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।” এর পাশাপাশি নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মৃতদেহ এভাবে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি, কিন্তু পাথর ছোড়া হচ্ছিল।” এবার থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য থানায় ব্যাগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

কালিয়াগঞ্জে হামলা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের ঘটনায় করা পদক্ষেপে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। “যারা বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হোক।… যারা দোষ করেছে তাদেরও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করুন। ইডি-সিবিআই যেভাবে করে। সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত না করলে এদের গুন্ডামি কমবে না। বিজেপি টাকা দিয়ে যদি সাহায্য করে সেটা বিজেপির ব্যাপার।”

নবান্নে সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠকে এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন সক্রিয় ছিল না পুলিশ? গন্ডগোলের খবর আগাম কেন পেল না গোয়েন্দারা? সেই বিষয় জানতে চান মমতা।

পাশাপাশি এদিন মালদার স্কুলে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনাকে দিল্লির চক্রান্ত বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘বাংলা জুড়ে চক্রান্ত চলছে। এর পিছনে দিল্লি আছে। কে বা কারা জানি না, কিন্তু এ টু জেড, দিল্লির চক্রান্ত। অশান্তি, গন্ডগোল বাঁধানোর চেষ্টা। কোনও স্বাভাবিক লোক হলে এ জিনিস করতে পারে না। হঠাৎ করে স্কুলে ঢুকে গেল? স্কুলে ঢুকেই বলতে হস্টেজ করবে! হস্টেজ করা যায় এই বুদ্ধিটা এল কোথা থেকে? কে দিল? এ যদি পাগল ছাগল হয়! মানে ধরা পড়লেই বলা হয় পাগল ছাগল, সাজিয়ে দেওয়া হয়…’ এরপরই এই ঘটনায় পড়ুয়াদের অক্ষত উদ্ধারের জন্য শিক্ষিকা ও পুলিসকে ধন্যবাদ জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। পাশাপাশি, স্কুলে পাহারা বসানোর কথাও বলেন তিনি। মমতা বলেন,’স্কুলকে বলব স্কুল চালু হলে পাহারার ব্যবস্থা করার জন্য।’

এদিন দুপুরে মালদা স্কুলে বন্দুকবাজের হামলা ঘটে। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে স্কুলের ক্লাসরুমের মধ্যে ঢুকে পড়ে বন্দুকবাজ। সপ্তম শ্রেণির ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ে বন্দুকবাজ। শুধু হাতে একটা নয়, হামলাকারীর কাছে একাধিক বন্দুক ছিল। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও বন্দুকবাজের সঙ্গে ছিল অ্যাসিড বোমা। এমনকি পায়ে ছুরিও বাঁধা ছিল। ঘটনাটি ঘটে মালদার মুচিয়া চন্দ্র মোহন হাইস্কুলে। তীব্র শোরগোল পড়ে যায় এই ঘটনায়। অস্ত্র হাতে ছাত্রদের রীতিমতো ভয় দেখিয়ে ‘পণবন্দি’ মত করে রাখে। বন্দুক উঁচিতে রীতিমতো শাসানি দিতে থাকে বন্দুকবাজ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ক্লাসের মধ্যে তাণ্ডব চালায় সে। ক্লাসরুমে তখন ভয়ে জড়সড় খুদে পড়ুয়ারা। প্রাণভয়ে চোখ মুখে তখন আতঙ্ক। দমবন্ধ করা ভয়াবহ পরিস্থিতি। খবর পেয়েই ছুটে আসে পুলিশ। কোনওমতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আচমকা ডিএসপি আজহারউদ্দিন খান ঝাঁপিয়ে পড়েন বন্দুকবাজের উপর। তিনি-ই বন্দুকবাজকে আটকান। তিনি-ই উদ্ধারকর্তা। সঙ্গে সঙ্গে তড়িৎগতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পড়ুয়া সহ অন্য পুলিশকর্মীরাও। মুক্ত করা হয় বন্দি পড়ুয়াদের।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*