নিয়োগ দুর্নীতির সবকটি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিমকোর্টের এই নির্দেশকে স্বাগত জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন উত্তরবঙ্গে দলীয় কর্মসূচি চলাকালীন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, “দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি জানান, “ভোটে লড়াই করতে না পেরে বিজেপি বিচারব্যবস্থার অল্প কয়েকজনকে কাজে লাগাচ্ছে। দু’ বছরে ২৬টি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” যদিও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না বলে এদিন জানান।
গত সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে অভিযোগ উঠেছিল, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষক নিয়োগে নিয়োগের দুর্নীতির মামলা শোনার সময় সেই মামলা নিয়ে টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানান, বিচারপতিরা কোনও ভাবেই তাঁদের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন না। উনি যদি সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন, তা হলে তিনি ওই মামলা শোনার অধিকার হারিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে নতুন কোনও বিচারপতিকে দায়িত্ব দিতে হবে। শুক্রবার সেই মর্মেই রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত সবকটি মামলা সরিয়ে দেওয়া হল। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে এই সংক্রান্ত নির্দেশ পাঠিয়েছে।
সুপ্রিম নির্দেশের পর এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই মামলায় আমি পিটিশনার ছিলাম। সর্বোচ্চ আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট সংক্রান্ত সমস্ত আদালতের মতকেই মর্যাদা দিয়ে চলি।
অভিষেক এদিন বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বা অন্য বিষয়ে তৃণমূলের কোনও নেতা বা মন্ত্রী বা কর্মীর বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ থাকে তা হলে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, “বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে বাংলায় পেরে উঠছে না। তাই বিচার ব্যবস্থার আশ্রয় নিয়েছে। বিচারব্যবস্থার এক-দু’জনকে কাজে লাগিয়ে তারা বাইশ মাসে তেইশটা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এ মাসে আরও তিনটে মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ২৪ মাসে ২৬ টি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বেছে বেছে এক বা দুজন বিচারপতি এগুলো করছেন। এই মামলাগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেলে, সর্বোচ্চ আদালত তা খারিজ করে দিচ্ছে। মানুষও দেখুক আসলে কী হচ্ছে।
Be the first to comment