আগুন জ্বলছে মণিপুরে। পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যাওয়ার পর এবার সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানেই তৃণমূলের তরফে দাবি জানানো হল, মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে হলে মণিপুরে পাঠাতে হবে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল।
শনিবার অমিত শাহের ডাকা সর্বদল বৈঠকে তৃণমূলের তরফে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সেখানেই তৃণমূলের বক্তব্য, “মণিপুরে একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে চলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার। মণিপুর জ্বলার অর্থ অসম, মণিপুর, মেঘালয় সহ গোটা উত্তর-পূর্ব সহ গোটা দেশের উপর প্রভাব পড়বে। কেন্দ্রীয় সরকার কি মণিপুরকে আর একটা কাশ্মীর বানাতে চাইছে?” তৃণমূলের তরফে আরও জানানো হয়েছে, “মণিপুরে ভীতি, আশঙ্কা আর নিরাশার আবহ। বহু মুল্যবান প্রাণ চলে গিয়েছে। আজ মণিপুরে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া, ৪ হাজার বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে, ৬০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। ৫০ দিন ইন্টারনেট নেই। সেখানে সাংবিধানিক সব ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।” এছাড়া শাহের মণিপুর সফর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “হিংসা শুরু হওয়ার ৪ সপ্তাহ পর তিনি সেখানে গেলেও ক্যাম্পে গিয়েছিলেন। তিনি রাস্তায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাত করেননি। যারা সেখানে ট্রমার মধ্যে রয়েছে। তার ৩ দিনের সফরে কোনও উন্নতি হয়নি মণিপুরে।”
তৃণমূল আরও জানিয়েছে, গত ২৯ মে মণিপুরে যেতে চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৩ সপ্তাহ বাদে কেন্দ্র শুধু সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছে। ১৫ জুন ডেরেক ও’ব্রায়েন সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন সংসদীয় কমিটিকে। সেই দাবিও মানা হয়নি। কেন্দ্রের ব্যর্থতায় আজ মণিপুরের হিংসা সাম্প্রদায়িক হিংসায় পরিণত হয়েছে। ২৫০টা চার্চ ভেঙেছে। ১৭টা মন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এরাজ্যের শাসকদলের দাবি, কেন্দ্র সরকারকে আগে নিজের ব্যর্থতা মেনে নিতে হবে। এবং সব দলের প্রতিনিধিদের পাঠাতে হবে হিংসা কবলিত রাজ্যে। কারণ সরকার এখনও মণিপুর নিয়ে ইতিবাচক কোনও পদক্ষেপ করেনি।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিদাঙ্গায় জ্বলছে মণিপুর। হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কুকি এবং মেইতেই জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষ। সম্প্রতি মণিপুর সরকারের এক রিপোর্ট বলা হয়েছে, রাজ্যে মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। প্রায় ২ হাজার অনুপ্রবেশকারী রয়েছে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের টানা আক্রমণের মুখে পড়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই শনিবার সর্বদল বৈঠক ডাকেন অমিত শাহ।
Be the first to comment