ডার্বির রং সবুজ-মেরুন। রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল এফসিকে ১-০ গোলে হারাল মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। এই জয়ের ফলে ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন সবুজ-মেরুন। এদিন বাগানের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। ২০০৪ সালের পর ফের ডুরান্ড কাপের মতো ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান।
ম্যাচে এদিন প্রথম থেকেই চলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের লড়াই। তবে তুলনামূলকভাবে প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকে লাল-হলুদ। ম্যাচের ১৭ মিনিটে সুযোগ তৈরি করে কার্লোস কুয়াদ্রাতের দল। ইস্টবেঙ্গলের বোরহা হেরেরা বাঁদিকে মন্দার রাও দেশাইকে পাস বাড়ান, কিন্তু শেষের ক্রসটি বিশাল কাইথ সহজেই পেয়ে যায়। এরপর ম্যাচের ২৪ মিনিটের মাথায় খাবরা এবং রাকিপ শেষ পর্যন্ত ওভারল্যাপে উঠে বাগানের উপর চাপ তৈরি করে। মহেশ এরপর বল পেয়ে প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু মোহনবাগান শেষ পর্যন্ত বল ক্লিয়ার করে দেয়। তবে এরই মধ্যে চোটে পেয়ে মাঠ ছাড়েন সেন্টার-ব্যাক জর্ডন এলসে। তাঁর পরিবর্তে মাঠে নামেন আন্তোনিও পারদো। এরপর ম্যাচের ৪৪ মিনিটে ফের সুযোগ চলে আসে লাল-হলুদের সামনে। রাকিপ এবং বোরহা মিলিয়ে পাল্টা আক্রমণে ওঠে। ডানদিকের ফ্ল্যাঙ্ক ধরে তারা আক্রমণে ওঠে। রাকিপ কাট ব্যাক করে বোরহাকে। বোরহার আবার সিভেরিও-কে ক্রস বাড়ায়। সিভেরিও চেষ্টা করলেও, মোহনবাগান বলটি ক্লিয়ার করে দেয়। তবে ফিরতি বল নন্দার সামনে এসে পড়ে। তিনি ভলিতে শট নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে শটটি লক্ষ্যের বাইরে বের হয়ে যায়। এরপরই আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় মোহনবাগান। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে বক্সের প্রান্তে বল পান সাহাল। তবে তাঁকে ঘিরে ফেলা হলে, তিনি একটি সোজা পাস বাড়ান পেত্রাতোসকে। পেত্রাতোস লক্ষ্যে শট নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বলটি গোলের ঠিক উপর দিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর আক্রমণে গেলেও প্রথমার্ধে গোলের দরজা খুলতে পারেনি কোন দলই। যার ফলে প্রথমার্ধ থাকে গোলশূন্য।
দ্বিতীয়ার্ধেও চলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের লড়াই। তবে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন লাল-হলুদ কোচ। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের ইস্ট-মোহন দুই দলের কোচ কিছু পরিবর্তন করেন। বোরহাকে তুলে ক্লেটন সিলভাকে নামান কুয়াদ্রাত। অপরদিকে আশিস রাইকে তুলে মনবীরকে নামান ফেরান্দো। তবে ম্যাচের ৬০ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখেন অনিরুদ্ধ থাপা। সিভেরিওকে বাজে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অনিরুদ্ধ। দশজনে হয়ে যায় সবুজ-মেরুন। দশজনে হয়ে যাওয়ার পরও আক্রমণ বজায় রাখে সবুজ-মেরুন। যার ফলে ম্যাচের ৭১ মিনিটে ১-০ এগিয়ে যায় মোহনবাগান। প্রতি-আক্রমণ থেকে বল ধরে অনেকটা দৌড়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে গোল করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। এরপর আক্রমণে গেলেও গোলের দরজা খুলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।
ডুরান্ড ফাইনালে এদিন অতিথি হিসাবে এসেছিলন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। খেলার আগে যুবভারতীর উপর দিয়ে ভারতীয় পতাকা নিয়ে ওড়ে হেলিকপ্টার। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টেরা বাইক নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেন।
Be the first to comment