নারী ক্ষমতায়নই যদি এই বিজেপি সরকারের উদ্দেশ্য হতো তাহলে মহিলা সংরক্ষণ বিল কেন ২০১৪ সালে আনা হল না? কেন সাধারণ নির্বাচনের ৬ মাস আগে বিশেষ অধিবেশন ডেকে পেশ হল এই বিল? কেন বিজেপি শাসিত ১৬ রাজ্যে একজনও মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নেই? কেন হাতরস, উন্নাওয়ের মতো ঘটনা আজও ঘটে চলেছে? বুধবার সংসদে বক্তব্য রাখতে উঠে এভাবেই মোদি সরকারকে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করলেন তৃণমূল সাংসদে কাকলি ঘোষদস্তিদার। পাশাপাশি জানালেন, দেশের মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে মোদি সরকারের উদ্দেশ্য মহিলাদের ক্ষমতায়ন নয়, আসন্ন নির্বাচনের আগে এটি আসলে ভোট গিমিক।
সংসদে বিশেষ অধিবেশনে পেশ করা হয়েছে মহিলা সংরক্ষণ বিল। এই বিল পাশ হলে লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলা প্রতিনিধির আসন সংরক্ষণ বেড়ে ৩৩ শতাংশ হয়ে যাবে। আজ লোকসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে আলোচনার সূচনা করছেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। গত ২৭ বছর ধরে মহিলা সংরক্ষণ বিল নানা কারণে সংসদে পাশ হয়নি। বিলটি প্রথমবার সংসদে পেশ করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে এইচডি দেবগৌড়া সরকারের আমলে। সংসদে সেই বিলের আলোচনাতে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার সংসদ ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এদিন বলেন, মহিলাদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করতে পারেননি মোদি সরকার। কেন হাথরস, উন্নাও ,জম্মুর মতো ঘটনা ঘটল। কেন ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড থাকা সত্ত্বেও মহিলারা টাকা পাচ্ছেন না? তিনি বলেন, আমরা এই বিলটিকে সমর্থন করি। পশ্চিমবঙ্গই দেশের একমাত্র রাজ্য যেখানে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন। লোকসভায় তৃণমূলের ৪০% মহিলা সাংসদ রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মহিলাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রশাসনিক পরিষেবা সম্পর্কে অবিরাম কাজ করে চলেছেন। যে চন্দ্রযান ৩ এর সাফল্য নিয়ে মোদি সরকার ঢাক পেটাচ্ছে সেই ইসরোর মহিলা বৈজ্ঞানিকরা দিনের পর দিন বেতন পাচ্ছেন না। দেশের স্বর্ণপদকজয়ী মহিলারা বিজেপি সংসদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার পরও মোদি সরকার চুপ থাকেন। আইআইটির মহিলা রিসার্চ স্কলাররা স্টাইপেন পাচ্ছেন না দিনের পর দিন অথচ নির্বিকার মোদি। মহিলা সংরক্ষণ বিল বিজেপির রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জায়গা। ২০২৪ নির্বাচনের আর ছয় মাস বাকি তার আগে এই বিল নিয়ে আসার অর্থ দেশবাসীর সাথে রাজনৈতিক ধোকা ছাড়া আর কিছুই নয়। লোকসভায় দাঁড়িয়ে একের পর এক অভিযোগে এভাবেই বিজেপি সরকারকে বিদ্ধ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার।
তিনি আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে, মহিলাদের অধিকার বজায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে যখন এটি প্রথম উত্থাপিত হয়েছিল তখন থেকেই তিনি মহিলাদের অধিকারের পক্ষে ছিলেন। গীতা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির সদস্য ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের যেকোনো রাজনৈতিক দলের চেয়ে আমাদের মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যা বেশি। বাংলা দক্ষতার সঙ্গে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের উন্নতির জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। তবে নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের এই সংরক্ষণ বিল ভোট গিমিক ছাড়া কিছুই না।’
Be the first to comment