প্রবল বৃষ্টিতে গত দু’দিনে মাটির বাড়ির দেওয়াল ধসে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। যাদের মধ্যে রয়েছে ৩ শিশু। এই ঘটনায় সরাসরি কেন্দ্রের মোদি সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিলেন, কোনও কারণ ছাড়া অন্যায়ভাবে আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। এই মৃত্যুর দায় নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের। ওনাদের হাতে মানুষের রক্ত লেগে আছে। পাশাপাশি মাটির দেওয়াল ধসে ৫ মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের গ্রেফতারির দাবি তুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাটির দেওয়াল ধসে ৩ শিশুর মৃত্যুতে তাঁদের পরিবারের ৪ সদস্যকে নিয়ে দিল্লির পথে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে গোটা ঘটনার দায় সরাসরি মোদি সরকারের উপর চাপিয়ে অভিষেক বলেন, “যাদের জীবন শুরুই হল না, ৩-৪ বছর বয়স তাদের মৃত্যুর দায় নরেন্দ্র মোদি, গিরিরাজ সিং আর এখানকার বিজেপি নেতাদের। যারা চিঠি লিখে বলেছে বাংলার মানুষের টাকা আটকে দাও যারা দিল্লিতে গিয়ে দালালি করেছে বাংলার মানুষের টাকা আটকে দাও তাদের হাতে আজ বাংলার মানুষের রক্ত লেগে রয়েছে। আমি মনে করি এসব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া উচিত এবং গিরিরাজ সিং-সহ সবকটাকে গ্রেফতার করা উচিত। কেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে না? ৩৩ লাখ মানুষের তালিকা, তার মধ্যে ১১ লাখ লোকের তালিকা আধার সিডিং হয়ে কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে। তার পরেও টাকা বন্ধ। একশো দিনের ৭ হাজার কোটি টাকা বন্ধ। এই যে ৪ জন দাঁড়িয়ে রয়েছে তাদের সবার জব কার্ডের টাকা বন্ধ রয়েছে। এক কাপড়ে এরা দিল্লি যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে। এদের বাড়িতে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। তার পরও এরা দিল্লি যেতে তৈরি হয়েছে।”
একইসঙ্গে এদিন কড়া সুরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, ১৫-২০ দিন আগে আমরা গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। তখন উনি জানালেন, উনি বাইরে থাকবেন তাই দেখা করতে পারবেন না। অথচ দেখা যাচ্ছে, উনি দিল্লিতেই আছেন। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন। শুধু তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করছেন না। এই ঘটনা আগেও ঘটিয়েছেন উনি। বিজেপি গায়ের জোরে টাকা আটকে রেখেছে এটা প্রমাণিত।” এরপরই রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য তুলে ধরেন অভিষেক। তিনি জানান, “সুকান্তবাবু বলছেন আন্দোলন করে কিছু হবে না, আমরা একটা ফোনব করলেই টাকা আসবে। এদিকে কেন্দ্রে তরফে বলা হচ্ছে ওনাদের কাছে অভিযোগ এসেছে তাই টাকা বন্ধ। এখন তৃণমূল জানতে চায়, গিরিরাজ কার কথায় প্রভাবিত হচ্ছেন? আসলে এরা বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে। দুর্নীতি যদি হয়েই তাকে তা হলে বিজেপির এত ভয় কিসের? ট্রেন আটকে দিচ্ছে? বিমান বাতিল করে দিচ্ছে। গোটা দিল্লিতে ১৪৪ ধারা জারি করে দিয়েছে যাতে তৃণমূল কোনও আন্দোলন করতে না পারে। কিন্তু এটা মানুষের লড়াই, ১ হাজার মোদি আমাদের আটকানোর চেষ্টা করলেও বিফল হবে। এটা ২-৩ তারিখের আন্দোলন নয়। যতদিন না প্রাপ্য আদায় ততদিন লড়াই চলবে, শেষ দেখে ছাড়ব।”
Be the first to comment