ইন্ডিয়া জোটে সিপিএমের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুযোগ ছিল, “অসম্মান সত্ত্বেও জোটের বৈঠকে যাই।” মমতার মন্তব্য থেকে রাজনৈতিক মহলের ধারণা হয়, তৃণমূল-কংগ্রেস কাছাকাছি আসছে না। কিন্তু এ বিষয়ে এখনই যে শেষ কথা বলার সময় আসেনি তা এদিন রাহুল গান্ধীর মন্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল। মঙ্গলবার গুয়াহাটি থেকে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বলেন, “আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত ও দলের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালো সম্পর্ক। ছোটখাটো বিষয় থাকে। তবে এখানে (অসমে) বসে এনিয়ে কিছু বলার নেই।” মমতার সঙ্গে জোট নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি। আসনরফা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন রাহুল।
লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী জোট করেছে কংগ্রেস-তৃণমূল-সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু আসনরফা নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। সূত্রের খবর, কংগ্রেস বাংলায় ১০টি আসনে লড়তে চাইছে। কিন্তু তৃণমূল তাদের জোটশরিককে দুটির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয়। এনিয়ে দুই দলের রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। একদিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খোঁচা দিয়ে বলেছেন, অসমে নিজের আসন ধরে রাখতে ব্যর্থ কংগ্রেস। আবার বাংলায় আসন নিয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখছে তারা। আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বারবার একলা চলো নীতির পক্ষেও সওয়াল করেছেন। তৃণমূলের চেয়ে বামেদের হাত ধরতে আগ্রহী। যদিও বারবার দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব অধীরের অবস্থানকে পাত্তা দিতে রাজি নয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির হাকডাক থেমে গিয়েছে দিল্লির নেতাদের সামনে। এদিন রাহুল গান্ধীর সাফ বার্তা, ওদের দলের কেউ কিছু বলে, “আমাদের দলের কেউ কিছু বলে। কিন্তু মমতাজির সঙ্গে ব্যক্তিগত ও দলের সম্পর্ক ভালো। আসনরফা নিয়ে আলোচনা চলছে।”
সোমবার সংহতি মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো ইন্ডিয়া জোটকে বার্তা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, “বাংলায় ইন্ডিয়া জোটের মিটিং করছে। এই নাম আমরা দিলাম। যেখানে যাই সেখানে দেখি, সিপিএম মিটিং কন্ট্রোল করে। যে দলের সঙ্গে ৩৪ বছরের লড়াই তাঁদের কথা শুনব?” আসনরফা নিয়েও তোপ দাগেন। বলেন “আমি বলেছিলাম ৩০০ আসনে লড়াই হোক। তার পর বাকিদের সাহায্য করে দেব। কিন্তু আসন নিয়ে আমাদের কথা শোনা হয় না। তবু চেষ্টা করি ইন্ডিয়া মিটিংয়ে যেতে। অসম্মান সত্ত্বেও জোটের বৈঠকে যাই।” তাঁর এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে জলঘোলা হতে শুরু করে। তবে কি ইন্ডিয়া জোট থেকে সরে দাঁড়াবে তৃণমূল। প্রশ্ন তৈরি হয়। এদিন সেই সম্ভাবনা কার্যত নস্যাৎ করে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সাফ জানিয়ে দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দল ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। ছোটখাটো সমস্যা থাকলে তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাহুল। বরং তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোটের পক্ষেই জোর সওয়াল করলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন. ইন্ডিয়া জোটে ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment