ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দেওয়া অসাংবিধাধিক। ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়ে দিল, মোদি জমানায় চালু ইলেক্টোরাল বন্ড পদ্ধতি সংবিধানের ১৯-এর এ ধারার পরিপন্থী। এই ইলেক্টোরাল বন্ড পদ্ধতি বন্ধ হওয়া উচিত।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে জানিয়ে দিয়েছে, মোদি জমানায় চালু হওয়া ইলেক্টোরাল বন্ড অসাংবিধানিক। দ্রুত সেটা বন্ধ হওয়া উচিত। সাংবিধানিক বেঞ্চ বলছে, ইলেক্টোরাল বন্ড ভোটারদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে। বেঞ্চের বক্তব্য, রাজনৈতিক দলগুলি ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ। তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার অধিকার রয়েছে সাধারণ ভোটারদের। ইলেক্টোরাল বন্ড সেই অধিকার খর্ব করছে। এদিন মামলাকারীদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এবং কপিল সিব্বাল। সলিসিটর জেনারাল, গোপনীয়তার অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ইলেক্টোরাল বন্ড বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করেন। কিন্তু সেই আপত্তি ধোপে টেকেনি।
সুপ্রিম কোর্টের রায়, এখনই ব্যাঙ্কগুলিকে ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যু করা বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, এ পর্যন্ত স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া যা যা ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যু করেছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কাছে ওই তথ্য তুলে দেবে স্টেট ব্যাঙ্ক। নির্বাচন কমিশন আবার সেই তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। অর্থাৎ কোন কর্পোরেট সংস্থা ইলেক্টোরাল বন্ডের আড়ালে কোন রাজনৈতিক দলকে, কত চাঁদা দিয়েছে সবটাই এবার প্রকাশ্যে চলে আসবে।
শীর্ষ আদালতের আশঙ্কা, বন্ডের মাধ্যমে এভাবে অনুদান দেওয়ার মধ্যে পালটা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা থাকে। বস্তুত, কর্পোরেটরা অনুদানের বিনিময়ে পালটা অনৈতিক সুবিধা প্রত্যাশা করে বলেই মনে করছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের সাফ বক্তব্য, শুধু কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই এবং ঋণদাতাদের গোপনীয়তা বজায় রাখার অজুহাতে এই পদ্ধতি চলতে দেওয়া যায় না।
Be the first to comment