চিরন্তন ব্যানার্জি :- ওবিসি শংসাপত্র মামলায় নোটিস জারি করল শীর্ষ আদালত। ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যকে নোটিস জারি করা হয়েছে। তার আগে সোমবারের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ সর্বোচ্চ আদালতের। সোমবার শীর্ষ আদালতে সেই মামলার প্রথম শুনানি ছিল। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ সোমবার ওবিসি তালিকাভুক্ত ৭৭টি সম্প্রদায়ের বিষয়ে রাজ্যের থেকে হলফনামা তলব করেছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা-সহ হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্যকে। রাজ্যের বক্তব্য জানার পর আগামী সপ্তাহের শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। ওবিসি তালিকাভুক্ত ওই ৭৭টি সম্প্রদায় নিয়ে কী ধরনের সমীক্ষা করা হয়েছিল, তা শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় উল্লেখ করতে হবে রাজ্যকে। পাশাপাশি রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের কোনও আলোচনা হয়েছিল কি না, সে কথাও জানাতে হবে হলফনামায়। সোমবার রাজ্যের তরফে হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সোমবারের শুনানি পর্বে কোনও স্থগিতাদেশ দেননি হাই কোর্টের নির্দেশের উপর। আগামী সপ্তাহের শুনানিতে স্থগিতাদেশের আবেদন শোনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ২২ মে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল সংক্রান্ত বড়সড় রায় দেয়। নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১০ সালের আগের ওবিসি শংসাপত্র বৈধ। তবে ২০১০ পরবর্তী অর্থাৎ ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যের দেওয়া সমস্ত সার্টিফিকেট বাতিল করে দেওয়া হয়। তার ফলে বাতিল হয়ে যায় কয়েক লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র। ডিভিশন বেঞ্চের দাবি, ২০১০ সাল পরবর্তী ওবিসি সার্টিফিকেট বৈধ নিয়ম মেনে ইস্যু করা হয়নি। তাই শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ। উচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও চাকরির সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বা অন্য কোনও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ওই শংসাপত্র ব্যবহার করা যাবে না। হাই কোর্টের নির্দেশের পরই তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার ও রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত কমিশন ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মূল মামলাকারীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, এই শংসাপত্র কাজে লাগিয়ে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। তবে শংসাপত্র বাতিলের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও প্রভাব পড়েনি। তাঁদের সকলের চাকরি বহাল থাকবে বলেই জানায় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের বক্তব্য, ওয়েস্ট বেঙ্গল ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন অ্যাক্ট ১৯৯৩ অনুযায়ী ওবিসিদের নতুন তালিকা তৈরি করতে হবে। সেই তালিকা বিধানসভায় পেশ করে চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে।
Be the first to comment