চিরন্তন ব্যানার্জি :- অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, কয়েকশো মানুষের মৃত্যুতে যখন রক্তাক্ত বাংলাদেশের রাজপথ, তারই মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আসেন শেখ হাসিনা।
আজ থেকে ৪৯ বছর আগে এরকমই একদিন জুলাই মাসে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসেন হাসিনা, সেদিনও দিদির সাথে ভারতে আসেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। তবে তখনও তিনি বুঝতে পারেননি, কত বড় বিপর্যয় আসতে চলেছে তাঁর জীবনে। তাঁর বাবা অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের সঙ্গে সেটাই ছিল তাঁর শেষ দেখা। পরের পাঁচ বছর শেখ হাসিনাকে ভারতেই আশ্রয় দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
দিনটা ছিলো ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই। বিমানবন্দরে দুই বোনকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন মুজিবর রহমান সহ পরিবারের সব সদস্যরা। পরিকল্পনা ছিলো, তাঁর স্বামী প্রয়াত এমএ ওয়াজেদ মিঞা জার্মানিতে থাকতেন, পেশায় তিনি তখন ছিলেন পরমানু বিজ্ঞানী। তাঁর কাছে রওনা দেবেন এবং সেখানেই কিছুদিন থাকবে। সেই মতো উড়ে যান তিনি জার্মানির উদ্দেশ্যে। ঠিক ১৫ দিন পর বাবার মৃত্যুর খবর যায় হাসিনার কাছে। সে দিন বাবার মৃত্যুর কথা বিশ্বাসই করতে পারেননি শেখ হাসিনা। শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, হাসিনার পরিবারের ১৮ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়। মৃতদের মধ্যে ছিলেন হাসিনার ১০ বছর বয়সী ভাইও। শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
পরবর্তীকালে সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে হাসিনা বলেছিলেন, দুই সন্তান-সহ শেখ হাসিনার পরিবারকে ভারতের দিল্লির অভিজাত এলাকা পাণ্ডারা রোডে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ছদ্মনামে থাকতেন তাঁরা। এমনকী তাঁর স্বামী প্রয়াত এমএ ওয়াজেদ মিঞার চাকরির ব্যবস্থাও করে দেন ইন্দিরা। তখন হাসিনার দুই সন্তান ছোটো। তাঁদেরকে পাঁচটা বছর ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, সে কথা একাধিকবার বলেছেন হাসিনা।
উল্লেখ্য, হাসিনা সরকার আসার পর ২০১০ সালে ঢাকায় তৈরি হয় ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার। এদিন সেই সেন্টারও ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
Be the first to comment