হুয়ামুন কবীরকে শোকজ করল তৃণমূল, তিনদিনের মধ্যে দিতে হবে উত্তর

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :-  ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুয়ামুন কবীরকে শোকজ করল তৃণমূল। তিনদিনের মধ্যে দিতে হবে উত্তর। দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বুধবার দলের বিধানসভা শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির তরফে শোকজ করা হয় তাঁকে।

বেশ কিছু মন্তব্যের জেরে গত কয়েক দিন ধরে বারবারই শিরোনামে উঠে এসেছেন হুমায়ুন। বিতর্ক তৈরি হয় দলের অন্দরেই। এবার শোকজের নোটিস ধরানো হল তাঁকে।
বুধবার বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে তৃণমূল বিধায়ক জানান, ‘শুনেছি আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি হাতে কোনও চিঠি পাইনি। তবে আমার কথায় যদি দলের অস্বস্তি হয়, আমি তার জবাব দেব।’
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অমান্য করে দল নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করার দায়ে এদিন হুয়ামুন কবীরকে শোকজ করার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্যের শাসক দল।
উল্লেখ্য, সোমবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ছিল তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। সেখানেই দলের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, দল-কে নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারবেন না। কেউ যদি দলের আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তাহলে তাঁকে শোকজ করা হবে। শুধু তাই নয় মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, ‘পর পর তিন বার কোনও নেতা যদি শোকজ করা হয়, এবং তিনি যদি উত্তর না দেয় তা হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’ তৃণমূল সুপ্রিমর এই নির্দেশের তিনদিনের মাথায় প্রথম শোকজ করা হল ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুয়ামুন কবীরকে।
উল্লেখ্য, একদা অধীরের লোক হিসাবেই পরিচিত ছিলেন হুমায়ুন। ২০১১ সালে রেজিনগর থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন। এর পর ২০১৩ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে প্রতিমন্ত্রী করেন মমতা। উপনির্বাচনে হেরে গেলে মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব কমে। পরে ২০১৫ সালের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে দল থেকে বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে রেজিনগরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে তৃণমূল প্রার্থী সিদ্দিকা বেগমকে তৃতীয় স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন হুমায়ুন। যদিও নিজে জিততে পারেননি। তারপর বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীর হাত ধরে বিজেপিতেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে বহরমপুরে তাঁকে প্রার্থীও করেছিল পদ্মশিবির। ভোটে হারার পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয় হুমায়ুনের। এ বার নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকে সরিয়ে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করেছিল ভরতপুরে। জিতেওছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে হুমায়ুনের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্যে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরে দল ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন। বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই তাঁর ‘বহিরাগত প্রার্থী’ মন্তব্য নিয়ে দলে বিস্তর আলোচনা হয়েছিল। যদিও পরে বিষয়টি মিটমাট হয়। ইউসুফের হয়ে প্রচারও করেছিলেন। ইউসুফও জিতেছেন ভোটে। কিন্তু হুমায়ুন নিজের জায়গাতেই রয়েছেন! ফের দল বিতর্কিত মন্তব্য করে শীর্ষ নেতৃত্বের রোষে তিনি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*